খুলনা-মোংলা সড়কের সাথে যুক্ত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা। নদীর ভাঙা-গড়ার খেলার মতো এই সড়কের অবস্থাও তেমন। নিম্নমানের কাজে একদিক দিয়ে গড়ে আবার অন্যদিকে ভাঙে এ সড়ক।
রূপসা উপজেলার কুদির বটতলা থেকে দ্বিগরাজ পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটারের ১০ কিলোমিটার সড়কের অবস্থাই বেহাল। পরিসংখ্যান বলছে, এ আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর এবং মোংলা পৌর এলাকার সাথে আমদানি-রপ্তানির হাজারো যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে এই সড়কে।
এই সড়কে গাড়িচালক ও যাত্রীরাদের দুর্ভোগের সীমা নেই। বিশেষ করে চুলকাটি বাজার পার হলেই ভোগান্তি শুরু হয়। এছাড়া জিরো পয়েন্ট ও দ্বিগরাজ বাজার পার হতেই সময় লেগে অনেক। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ভেঙে ভারী যানবাহন বন্ধ হয়ে চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়।
একই চিত্র খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের। পুনর্নির্মাণ ও প্রশস্ত করার ৪ বছরের মধ্যেই অনেক স্থানে পিচ উঠে গেছে, কোথাও উঁচু নীচু, কোথাও আবার গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। পদ্মা সেতু চালুর পর এই আঞ্চলিক মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।
বিশেষ করে এই সড়ক দিয়ে বেনাপোল ও ভোমরা বন্দর থেকে বেশি চলে পণ্যবোঝাই যানবাহন। সড়কটির সর্বোচ্চ ওজন নেয়ার সক্ষমতা সাড়ে ২২ টন হলেও এ দুই বন্দর থেকে ৫০ টনের যানবাহন চলছে নিয়মিত।
২০২০ সালে কাজ শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে সড়ক সংস্কারের মধ্যেই এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি। নিঝুম পল্লির সামনে থেকে ডুমুরিয়ার দিকে প্রায় এক কিলোমিটার এখন খানাখন্দের ভরা। একইভাবে গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মোড় থেকে উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত আধা কিলোমিটারের একই অবস্থা। ৬০ কিলোমিটারের পুরো সড়কটিই ঝূকিপর্ণ।
অন্যদিকে স্থল ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বন্দরকেন্দ্রিক সড়কের এমন অবস্থা থাকলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য অন্য বন্দরের দিকে ঝুঁকবে। এতে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
সড়ক বিভাগ বলছে, খুলনা-মোংলা ও খুলনা-ভোমরা আঞ্চলিক মহাসড়ককে ৬ লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
৪ বছর আগে চুকনগর পর্যন্ত খুলনা অংশের ৩৩ কিলোমিটার পুনর্নির্মাণ ও প্রশস্ত করার জন্য ব্যয় হয় ১৬০ কোটি টাকা। এছাড়া নতুন প্রকল্প অনুযায়ী খুলনা-মোংলা সড়ক প্রশস্তকরণ ও সংস্কারে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।