দেশে এখন
0

ধর্মীয়-রাজনৈতিক ও কূটনীতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটায় ভুল তথ্য

আলোচনায় দক্ষিণ এশিয়ার ফ্যাক্ট চেকাররা

ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে ধর্মীয়-রাজনৈতিক ও কূটনীতিক সম্পর্কের অবনতি হয়; ফলে উত্তেজনা দেখা দেয়, যা গড়ায় সংঘর্ষে। রাজধানীতে আন্তঃসীমান্ত গুজব ছড়িয়ে পড়া বিষয়ক এক আলোচনায় এ তথ্য উঠে আসে। ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাইয়ের পরই তা প্রকাশের অনুরোধ ফ্যাক্ট চেকারদের। তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের অভিযোগ ভারতসহ বিভিন্ন দেশ জুলাই-আগ্টের গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলে গুজব ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা বলেন তিনি।

আজ (রোববার, ৬ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) আয়োজিত 'দ্যা ক্রস বর্ডার স্প্রেড অফ মিসইনফরমেশন ইন সাউথ এশিয়া' শীর্ষক আলোচনায় উঠে আসে এসব তথ্য।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ৯ আগস্ট রিউমার স্ক্যানার জানিয়েছে ভারতীয়দের ছড়ানো ২০টিরও বেশি গুজব শনাক্ত করেছে তারা।

সেসময় এক্সে মৌহান গৌড়া নামে আইডি থেকেএকটি ছবি পোস্ট করা হয় বাংলাদেশ-আসাম সীমান্তে শরনার্থীদের ভিড় তৈরি হয়েছে। অথচ ছবিটি ২০১৮ সালে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে দুই দেশে বসবাসরত বিচ্ছিন্ন আত্মীয়দের মিলনমেলার ছবি।

বর্তমানে মানুষ সত্যের চেয়ে ন্যারেটিভ বেশি বিশ্বাস করে আর এই সুযোগ নেয় দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহল। কেবল বাংলাদেশ নয় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানেও অহরহই গুজব ছড়ানো হয়।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশাল প্ল্যাটফর্মে ছড়ানো হয় নানা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য।

সবশেষ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম হিজবুত তাহরীর নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রচার করা হয়। মুহূর্তের মাধ্যমেই সে তথ্য সোস্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পরে, সেই তথ্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় প্রচার হতে থাকে।

এমন বাস্তবতায় রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে দক্ষিণ এশিয়ায় গুজব কিভাবে ছড়ায় এ নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ফ্যাক্ট চেকাররা।

আলোচনায় উঠে আসে, তথ্য যাচাই-বাছাই না করেই বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, ফলে এক দেশের সাথে অন্য দেশের ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও কূটনীতিক সম্পর্ক অবনতি হচ্ছে। তাই গণমাধ্যমগুলোকে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পরেই তা প্রকাশের অনুরোধ জানানো হয়।

ভারতে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডোর সিইও রাহুল নাম্বরি বলেন, ‘অবশ্যই, যেকোনো দেশেই ভুল তথ্য ছড়ানো হলে সেই দেশের সাথে অন্য দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপের দিকেই যেতে থাকে। তাই তথ্য ছড়ানোর আগে সেটি সবাইকে যাচাই-বাছাই করতে হবে।’

বুম ফ্যাক্ট চেকের নিউজ এডিটর সোয়াস্তি চ্যাটার্জি বলেন, ‘বাংলাদেশ অথবা ভারত যে দেশ থেকেই ভুল তথ্য ছড়ানো হোক না কেনো সেটি দুই দেশের মানুষের মাঝে চিন্তার ভাঁজ ফেলে।’

বাংলাদেশের বেশির ভাগ গণমাধ্যমগুলোতে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আলাদা কোন বিভাগ না থাকায় খুব সহজেই তা ছড়িয়ে পরছে বলে মনে করেন বক্তারা। এছাড়াও ভুল তথ্য যাচাই না করে হুবহু ছাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ কারণে উত্তেজনা ছড়ায়।

মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা। বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ছড়ানো তথ্য প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর