দুর্বল ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠনের পর তারল্য ঘাটতি কীভাবে মেটানো হবে তা নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। অনেকটা প্রতিদিনের লেনদেন করাই কঠিন হয়ে পড়ে ব্যাংকগুলোর জন্য। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা করতে নারাজ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সমস্যা মেটাতে গেল মাসের শুরুতে বলা হয়- ব্যাংকখাতে থাকা অর্থই ঋণ হিসেবে ব্যবহার করে তারল্য ঘাটতি মেটানোর সূত্র। যাতে সবল ব্যাংকগুলো সাড়া দিলেও বিপত্তি ঘটে সুদহার ও অর্থ ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা নিয়ে- যা পুরো মাসে আর এগোয়নি এই প্রক্রিয়া। তবে গেল সপ্তাহের শেষে সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে ১০ ব্যাংকের বৈঠকের পর কিছুটা বাঁক নেয় সবল ব্যাংকগুলো।
এবার ৯ দুর্বল ব্যাংককে ঋণ দিচ্ছে সবল ব্যাংকগুলো। তবে এটি কলমানির মতো সাধারণ হবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, সাড়া পাওয়া গেছে সরকারি ব্যাংক ছাড়াও ব্র্যাক, ইস্টার্ন ব্যাংক, বিডিবিএল, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক থেকেও। সিটি ব্যাংক নিজেই ৩ ব্যাংককে ঋণ দিতে ইচ্ছুক। এর মধ্যে চতুর্থ প্রজন্মের অনেক ব্যাংকও আগ্রহী ঋণ দিতে। ব্যাংকার্সরা বলছেন, এখন টাকার দরকার। দেরি হলে চাহিদার অঙ্ক আরো বাড়বে।
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে বাংলাদেশের পুরো অর্থনীতি জড়িত। ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার না হয়, ব্যাংকিং খাত যদি খারাপ হয় তাহলে খাত নষ্ট হলে সব নষ্ট হবে।
তবে কোন ব্যাংক চাহিদার বেশি ঋণ দিতে বা নিতে পারবে তা নির্ধারণ করা হবে- বাংলাদেশ ব্যাংক কোন ব্যাংকের কত টাকার গ্যারান্টার হবে। এছাড়া একই সাথে এই অর্থ দেয়া হবে না। তাতে আসতে পারে ঋণের কিস্তি। প্রতি ধাপের ঋণের পর হবে ইভাল্যুয়েশন। তিন মাসের কিস্তিতে এটি হবে ১ বছরের জন্য পরিকল্পিত সহায়তা। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের পর ঋণ আটকে রাখার সুযোগ পাবে না গ্রহীতা ব্যাংকগুলো।
আর্থিক খাত বিশ্লেষকরা বলছেন, তলানীতে পৌঁছে যাওয়া ব্যাংকগুলোর জন্য এটি সোনালি সুযোগ। তাই এই ঋণের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে।
বাংলাদেশ একাডেমিক ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটসের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক আসলে অবজার্ব করবে প্রতিদিন কত টাকা লেনদেন হয়। কেমন ডিপোজিট পায় এবং কেমন ডিপোজিট তোলা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ফাইনান্স করবে সেক্ষেত্রে তাদের জন্য এইটা একটা টাপ হবে ক্যালকুলেশন করে। কোনো ব্যাংকই এই ঋণ খারাপভাবে ব্যবহার করবে না।’
তবে আল আরাফা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন হলেও তারল্য সংকট না থাকায় তাদের কোনো আবেদন নেই ঋণের।