ফোরামটি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে গৃহকর্মীদের অধিকার আদায়, গৃহকর্মীদের জন্য ২০১৫ সালের সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা বাস্তবায়ন, গৃহকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানি প্রতিরোধ ও গৃহকর্মীদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে তৃণমূল থেকে নীতিনির্ধারণী পর্যায় পর্যন্ত কাজ করবে বলে জানায়।
সুনীতি প্রকল্পের অধীনে ২০০ সদস্যের এই ফোরামটি ২১ জনের একটি কমিটি নিয়ে ১৬ হাজার গৃহকর্মীর জন্য কাজ করবে এবং ক্রমশ দেশব্যাপী তাদের কার্যক্রম শুরু করবে।
গৃহকর্মী জাতীয় ফোরামের সভাপতি গৃহকর্মী জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমাদের মূল দাবি দেশের সকল গৃহকর্মীকে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এমনকি দেশে ঠিক কত নারী গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োজিত, তার সঠিক তথ্য-উপাত্তও নেই। গৃহকর্মী জাতীয় ফোরাম রাষ্ট্রের কাছে এইসব দাবি নিয়ে কাজ করবে। এই ফোরাম সকল গৃহকর্মীদের সুরক্ষায় কাজ করবে।’
অন্যদিকে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা গৃহকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি সদেয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘এই ফোরামের মাধ্যমে যে ১৬ হাজার গৃহকর্মীদের সাথে আমরা সম্পৃক্ত হচ্ছি, তারা নিজেদের অধিকার নিয়ে কাজ করবে। আমরা বিশ্বাস করি, এখানকার সফলতা অন্যান্য অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের উদ্বুদ্ধ করবে। চা-বাগানের শ্রমিকদের উদ্বুদ্ধ করবে, নারী মৎস্যজীবীদের উদ্বুদ্ধ করবে।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। বলা হয়, বাংলাদেশে ২৫ লাখের বেশি মানুষ গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন, যাদের ৯০ শতাংশ নারী। অনানুষ্ঠানিক খাতের এই বিশাল কর্মীরা জাতীয় অর্থনীতিতে সরাসরি অবদান রাখলেও, শ্রমিক হিসেবে তারা বাংলাদেশ শ্রম আইনে এখনও অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি।
ফলে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক স্বীকৃতি থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। ২০২২ সালে অক্সফামের একটি গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, নারী সদস্যদের প্রায় ৯৩ শতাংশ তাদের কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন। গৃহকর্মীদের ৬৭ শতাংশ মানসিক নির্যাতন, ৬১ শতাংশ মৌখিক নির্যাতন এবং ২১ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।
দেশের গৃহকর্মীদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ২০২০ সালে সুনীতি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করছে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ, ডিএসকে, কর্মজীবী নারীসহ অন্যান্য সহযোগী সংস্থা। ইতোমধ্যে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই পেশায় নিয়োজিত প্রায় ১৮ হাজার নারী গৃহকর্মীদের পেশাগত ও জীবন দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে সার্বিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে প্রকল্পটি।