উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

হোয়াইট হাউসের দখল ফিরে পেতে ইলন মাস্কের পথে হাঁটছেন ট্রাম্প

হোয়াইট হাউসের দখল ফিরে পেতে এবার মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের জনপ্রিয়তায় ভর করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় এলে ইলন মাস্ক তার প্রশাসনের ব্যয় সংকোচনের দায়িত্ব পালন করবেন বলে ঘোষণা দিলেন তিনি। এছাড়া অবৈধ অভিবাসী ইস্যুতে প্রতিদ্বন্দ্বী কামালা হ্যারিসকে আবারও তীরবিদ্ধ করলেন ট্রাম্প। আর কামালা বলছেন, অভিবাসীদের নিয়ে মার্কিনদের মনে ভয় ও বিভাজনের শিখা জ্বালানোর পায়তারা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে, অবৈধ অভিভাসী ও মাদকচোরাচালান ঠেকাতে আরও কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিলেন কামালা।

দরজায় কড়া নাড়ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আর একে সামনে রেখে যতই সময় গড়াচ্ছে ততই যেন প্রতিদ্বন্দ্বী কামালা হ্যারিসকে পরাজিত করে হোয়াইট হাউসের দখল ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। একদিকে যেমন ভোটারদের সমর্থন বাড়াতে বিষোদগার করছেন কামালা হ্যারিসের, অন্যদিকে দিচ্ছেন যুগোপযোগী প্রতিশ্রুতিও।

এরই ধারাবাহিকতায় এবার হোয়াইট হাউজের মসনদ নিশ্চিতে মার্কিন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার কর্নধার ইলন মাস্কের জনপ্রিয়তার ওপর ভর করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। শুক্রবার মিশিগানের এক সমাবেশে এমনটাই আভাস দিলেন তিনি। বলেন, নির্বাচিত হলে তার প্রশাসনে ব্যয় সংকোচনের দায়িত্ব পাবেন ইলন মাস্ক। এর মধ্য দিয়ে দেশের ট্রিলিয়ন ডলার খরচ কমানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদী তিনি। ফলে, মার্কিন অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে বলে দাবি ট্রাম্পের। এমনকি মার্কিন গাড়ি শিল্প বিকাশে মেক্সিকান সীমান্ত পেরিয়ে আসা প্রতিটি গাড়ির উপর একশ থেকে দু'শ শতাংশ শুল্ক আরোপেরও হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'আমি ইলন মাস্ককে পেতে যাচ্ছি। তিনি আমাদের খরচ কমাতে কাজ করবেন। আমি মনে করি তিনি এ দায়িত্ব পেলে ট্রিলিয়ন ডলার খরচ বাঁচাতে পারবো আমরা। যদিও, আমি মনে করি না যে তিনি তাঁর পুরোটা সময় আমাদের দিতে পারবেন। কেননা তিনি তার ব্যবসা নিয় ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু তিনি আমাকে বলেছেন, দেশে অপচয় হচ্ছে। ফলে খরচ কমানোর জন্য তিনি ভালো কিছু করবেন এতে কোন সন্দেহ নেই'।

কামালা হ্যারিস ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন মেস্কিকো সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে না পারায় ছোট ছোট শহরগুলো দুর্বিষহ শরণার্থী শিবিরে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে ডেমোক্র্যাটরা মার্কিনদের চাকরির বাজারও সংকটে ফেলেছে বলেও অভিযোগ করেন এই রিপাবলিকান নেতা।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো বলেন, 'তাদের মেয়াদে কমপক্ষে ২ কোটি ১০ লাখ অভিবাসী এসেছে। যাদের মধ্যে অনেকেই সত্যিকারের খারাপ মানুষ। তাদের কারণে মার্কিনদের চাকরির বাজারও সংকটে পড়েছে। আমরা এক্ষেত্রে এমন কিছু পরিবর্তন আনতে চাই যেন আপনাদের কল্যাণ হয়'।

এ অবস্থায় প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে বিষ্ফোরক মন্তব্য করে কামালা হ্যারিস বলেন, 'অভিবাসীদের নিয়ে মার্কিনদের মধ্যে আতঙ্ক ও বিভাজন তৈরির অপচেষ্টা করছেন ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রথমবারের মতো ইউএস-মেক্সিকো সীমান্ত গিয়ে এ কথা বলেন তিনি'।

কামালা হ্যারিস আরো বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প সীমান্ত সুরক্ষা বিলটি নিয়ে নাশকতার চেষ্টা করছেন। আপনাদের কাছে আমার অঙ্গীকার, আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে আমি একটি যুযোপযোগী আইনে স্বাক্ষর করব'।

একইসঙ্গে অবৈধ অভিবাসী ইস্যুতে জনপ্রিয়তায় ধস ঠেকাতেও শক্ত অবস্থানের বার্তা দিলেন কামালা। অবৈধ অভিভাসী ও মাদকচোরাচালান ঠেকাতে আরও কঠোর হওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। এজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রযুক্তি সক্ষমতা বাড়ানোরও আশ্বাস দেন কামালা।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস আরো বলেন, 'আমি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শক্তি বাড়াতে তাদের আরও ভালো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো। সেইসঙ্গে প্রযুক্তি সক্ষমতাও বাড়ানো হবে। এরমধ্যে ১০০টি নতুন নজরদারি ব্যবস্থা থাকবে, যাতে যানবাহনে লুকানো অবৈধ অভিভাসী ও ভয়াবহ মাদকদ্রব্য ফেন্টানিল সনাক্ত করা সম্ভব হয়'।

এদিকে, অবৈধ অভিবাসী, মাদক চোরাচালান, বেকারত্ব কমানোর মতোই বন্দুক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে এবারের মার্কিন নির্বাচনে। এসব ইস্যুতে যে প্রার্থী সমাধানের কার্যকরী পথ দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন, তিনিই হোয়াইট হাউসের পরবর্তী অধিপতি হবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।