ছাত্র-জনতার রক্তমাখা গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ভেঙে পড়ে টানা তিন মেয়াদের শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার। হাজারো ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয় এক নতুন বাংলাদেশ।
স্বৈরাচার সরকারের পতনের তিন দিনের মাথায় দায়িত্ব গ্রহণ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ শুরু করেন তারা। একদিকে, সামনে আসে গত সরকারের আমলে বঞ্চিতদের দাবি দাওয়া, অন্যদিকে ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।
এমন অবস্থায় আস্থা ফেরাতে মানুষের পাশে দাঁড়ায় সশস্ত্র বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে সরকার। রদবদল হয় বিশ্ববিদ্যালয়, প্রশাসনসহ সরকারি নানা সংস্থার শীর্ষ পদে।
প্রবাসীদের পাঠানো উল্লেখযোগ্য রেমিট্যান্স এসেছে সরকারের প্রথম মাসে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিশৃঙ্খলা কাটাতে নানামুখী চেষ্টা শুরু হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যও সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বৈদেশিক সম্পর্কে আসছে পরিবর্তন। সর্বোপরি রাষ্ট্র সংস্কারে বেশ তৎপর অন্তর্বর্তী সরকার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আখতার বলেন, ‘বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় থাকা আপিল বিভাগে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। হাইকোর্টে এখনো পরিবর্তন প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অচল অবস্থা ছিল। অনেক জায়গায় উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। আশা করছি এসব জায়গায় শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি।'
হাসান আরিফ আরও বলেন, ‘ছাত্র, জনতা, শ্রমিক তাদের যে গণঅভ্যুত্থান তারাই আজকের দেশের মূল মালিক। তাদের দাবি হচ্ছে সংস্কার। তারা যে-সব জায়গায় দাবি জানাচ্ছে বিশেষ করে সব ক্ষেত্রেই সংস্কার প্রয়োজন। হাঁটার ক্ষেত্রে রাস্তা ঠিক থাকাও একটা সেবা। বিদ্যুৎ থাকা দরকার, খাওয়ার জন্য ভালো পানি থাকা দরকার। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সেবাই সেবা।’
সমন্বয়ক আখতার বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের শিকল দেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে আছে। দেশকে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা থেকে চূড়ান্তভাবে মুক্ত করতে আমাদের সংগ্রাম আরও দীর্ঘতর হবে বলেই আমার মনে হয়।’
ছাত্র জনতার মতামতের ভিত্তিতেই সংবিধান সংস্কার করা হবে বলে জানান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা। তবে প্রশাসন এখনও পুরো কার্যকর হয়নি। দেশে পুরোপুরি শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রশাসনকে আরও কার্যকরী করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে।