পাখির চোখে দেখলে বিস্তীর্ণ খালে কোথাও পানির অস্তিত্ব চোখে পড়ছিল না। এখানে মাছের জীবনধারণ ছিল অসম্ভব। প্রায় এক যুগ ধরে কচুরিপানায় ভর্তি থেকে মজা পরিত্যক্ত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল শালিখা উপজেলা সদরের পার্শ্ববর্তী তিন কিলোমিটার লম্বা কানুদহের খালটি। এর প্রভাবে নষ্ট হচ্ছিল পরিবেশের ভারসাম্য।
খালের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে আনতে ও খাল সংলগ্ন ইকোপার্কের সৌন্দর্য বর্ধনে স্থানীয়দের নিয়ে কচুরিপানা অপসারণ কার্যক্রমে সক্রিয় হয় স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।
জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়া এ কার্যক্রমে সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, ছাত্র শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রায় ২হাজার স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেন। কয়েক দিনের প্রচেষ্টায় কচুরিপানা মুক্ত হয়ে প্রাণ ফিরে পায় খালটি।
এ কার্যক্রমে অংশ নেয়া একজন জানান, খাল পরিষ্কারের কার্যক্রমে অংশ নিতে পেরে গর্ব বোধ হচ্ছে। আরেকজন জানান, পরিবেশের সুরক্ষায় ও ভারসাম্য রক্ষার্থে আমরা এ খাল পরিষ্কারে নিয়োজিত আছি।
এ ধরনের কার্যক্রমে অংশ নিতে পেরে নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সুন্দর পৃথিবী উপহার দেয়ার আশা প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধা ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ।
পাখির চোখে পানির অস্তিত্ব খুঁজে না পাওয়া খালটি পরিষ্কারের পর যেন অপরূপ সৌন্দর্যের এক লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। খালের স্বচ্ছ পানিতে মাছের আনাগোনা বেড়েছে। কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে আসছেন খালটির পাড়ে নির্মিত ইকো পার্কে।
শালিখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, ‘খাল পাড়ের আশেপাশে যেসব মানুষ রয়েছে তারা এখানের পানি ব্যবহার করে, অনেকে গোসলও করে। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা চিন্তা করেছি যে খালটাকে পরিষ্কার করে একইসঙ্গে পার্ক ও লেক। লেকটাকে পরিষ্কার করে যদি আমরা দৃষ্টিনন্দন করতে পারি তাহলে শালিখার মানুষের বিনোদনের যে অভাব বা কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই তেমন একটি পরিবেশ তৈরি হবে।’
স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের যৌথ আয়োজনে এমন কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রাণ ও প্রকৃতি রক্ষায় সর্বস্তরের মানুষ এগিয়ে আসবেন এমনটাই আশা সচেতন মহলের।