গেল কিছুদিন ধরেই ইউরোপজুড়ে অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে চলেছে তাপমাত্রার পারদ। তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে মহাদেশটির দক্ষিণাংশ।
আবহাওয়ার অস্বাভাবিক আচরণের কারণে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না গ্রিসের দাবানল। ইতোমধ্যেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ১ লাখ একর বনভূমি। আট্টিকা অঞ্চল থেকে দাবানল ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানী এথেন্সেও। ম্যারাথন ও পেনটেলি শহরের ৪০টিরও বেশি স্থানে সক্রিয় দাবানল চলে গেছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এরইমধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে।
দমকল বাহিনী জানায়, কয়েক যায়গায় দাবানলের শিখার উচ্চতা ছাড়িয়ে গেছে ৮২ ফিট। তাই আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে ৩৫টি অগ্নিনির্বাপক বিমানের মাধ্যমে দাবানল নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম। ৭শর বেশি দমকল কর্মীর পক্ষেও পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব না হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাহায্য চেয়েছে গ্রিস সরকার। ইতোমধ্যেই দমকল কর্মী ও সরঞ্জাম পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ইতালি, ফ্রান্স, সার্বিয়া, স্পেন, চেক প্রজাতন্ত্র, রোমানিয়া ও তুরস্ক। ভয়াবহ এ দাবানলে প্রাণ গেছে কয়েকজন দমকল কর্মীর।
পরিস্থিতি খুবই ভয়ানক। সবকিছু পুড়তে দেখার পরেও কিছুই করতে পারছি না।
বাড়ির ছাদে আগুন ধরে যায়। সৌভাগ্যবশত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে আমি সরে আসি। প্রতিবেশিরা আমকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান।
এদিকে, প্রতিবেশি ইতালিতেও চলছে চলতি বছরের সবচেয়ে উষ্ণ সপ্তাহ। ইতোমধ্যেই তাপমাত্রার পারদ ছাড়িয়ে গেছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কাঠফাটা গরমের কারণে দেশটির ২৭টি প্রদেশের মধ্যে ১৪টিতেই জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। বয়স্কদের বাড়িতে থাকার অনুরোধ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে পথচারিদের স্বস্তি দিতে রাস্তায় বসানো হয়েছে স্প্রিংকলার। আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ না খাওয়াতে পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন পর্যটকরা।
এছাড়াও, স্পেনের গ্রানাডা, বিলবাও ও টেলোডো সহ বেশ কয়েকটি শহরের তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিটওয়েভ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে ফ্রান্স, তুরস্ক, ও আলবেনিয়ার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে। সোমবার যুক্তরাজ্যের তাপমাত্রা ছিলো চলতি বছরের সর্বোচ্চ ৩৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ইউরোপজুড়ে আরো ১০ দিন তীব্র তাপপ্রবাহ থাকার পূর্বাভাস দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা।
এদিকে ২০২৩ সালে তীব্র দাবদাহে ইউরোপে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের প্রাণহানির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্সেলোনা ইন্সটিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ।