শৈল্পিক ফুটবলের দেশ ব্রাজিল। সেই দেশে ফুটবল প্রতিভার কোনো অভাব নেই। তেমনি এক প্রতিভার নাম মার্তা ভিয়েরা দ্য সিলভা। তার জন্ম ১৯৮৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ব মার্তা নামেই তাকে সবচেয়ে বেশি চেনে।
বয়স যখন তার সবে ১৪ পেরিয়েছে। আর পাঁচটা সাধারণ পরিবারের মেয়ের মতোই কাটছিল তার ছেলেবেলা। তবে, ছোট থেকেই ফুটবল হয়ে উঠেছিল মেয়েটির ধ্যানজ্ঞান এবং পাড়ার রাস্তায় প্রতিবেশি ছেলেমেয়েদের সাথে খেলার মধ্য দিয়ে ফুটবলে তার হাতেখড়ি। পাড়ার ছেলেরাও তার দুর্দান্ত স্কিলে নাস্তানাবুদ হতো প্রতিনিয়ত।
ওই বয়সেই তাই কোচের নজরে পড়ে গেলো মেয়েটি। এরপরেই ছেলেদের সাথে মাঠে নেমে পড়া সেদিনের সেই ছোট্ট মেয়েটিই ভাস্কো দা গামা, সান্তাক্রুজ, উমেয়া আইকে, লস অ্যাঞ্জেলেস সোল, স্যান্টোসের মতো ক্লাব মাতিয়ে আজকের নারী ফুটবল জগতে সবচেয়ে বড় তারকা মার্তা।
মেয়েদের ফুটবলের পেলে হিসেব স্বীকৃতি পাওয়া মার্তা মহিলা ফুটবলের ইতিহাসে এক সাড়া জাগানো নাম। স্বয়ং পেলেও তার সাথে এই তুলনা মেনে নেন নির্দ্বিধায়। পেশাদার ফুটবলে প্রায় দুই যুগ কাটিয়ে দিয়েছেন মার্তা। হয়ে উঠেছেন নারী ফুটবলের 'পোস্টার গার্ল'। সর্বকালের অন্যতম সেরাদের একজন হয়েও কখনও বিশ্বকাপ কিংবা অলিম্পিকে সোনা জেতা হয়নি মার্তার। শেষ বেলায় চেয়েছিলেন প্যারিস অলিম্পিকের সোনা জিতে আক্ষেপ ঘোচাতে। তৃতীয়বারের মতো জিতলেন অলিম্পিক ফুটবলের রুপা। প্যারিসে পা রাখার আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এটাই তার শেষ টুর্নামেন্ট।
বিশ্বকাপে নারী এবং পুরুষ দুই সংস্করণ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড রয়েছে মার্তার দখলে। তবে, বিশ্বকাপ না জেতার আক্ষেপ রয়ে গেছে এই সেলেসাও কিংবদন্তির। ব্যক্তিগতভাবে ২০০৬ থেকে ২০১০ পর্যন্ত টানা ৫ বছর জিতেছেন বর্ষসেরা নারী ফুটবলারের খেতাব। আট বছর বিরতি দিয়ে ২০১৮ তে আরও একবার সেই সম্মাননা জিতেন তিনি। অবশ্য ব্রাজিলের জার্সিতে একেবারেই শূন্য নন তিনি। প্যান অ্যামেরিকান ফুটবলে দু'বার স্বর্ণ আর কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছেন তিনবার।
সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারের অনেক অর্জনের সাথে সম্পদের দিকেও মার্তা সকল নারী ফুটবলারকে পেছনে ফেলেছেন। বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালী প্রমীলা ফুটবলার তিনি। তার সম্পদের পরিমাণ ১৩ মিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশি অংকে প্রায় ১৫৩ কোটি টাকা।