জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৭৮ সাল থেকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা তৈরি শুরু করে। ২১টি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনার তালিকা নির্বাচন করে। এবার ইউনেস্কোর ৪৬তম অধিবেশন প্রথমবারের মতো ভারতে আয়োজন হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বেশকিছু জায়গা ও স্থাপনা ইউনেস্কোর ঐতিহ্যের তালিকায় আছে।
আসামের পিরামিড হিসেবে পরিচিত মৈদাম সমাধিক্ষেত্র এবার ঠাঁই পেল ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায়। মৈদাম আদতে ছিল গোপন কক্ষ। এটি ভারতের আসাম রাজ্যের রাজাদের প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো একটি সমাধিক্ষেত্র।
আসামের পিরামিড হিসেবে পরিচিত মৈদাম সমাধিক্ষেত্র। ছবি: সংগৃহীত
তখন রাজাদের মরদেহের সঙ্গে তাদের ব্যবহৃত প্রিয় সামগ্রীও দেয়া হতো। খনন কাজের সময় সন্ধান মিলেছে অনেক গয়না, অস্ত্র ও রাজকীয় প্রতীকের। ৩৮৬টি মৈদামের মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে মাত্র ৯০টি।
চীনের দুটি প্রাকৃতিক স্থান এবং একটি প্রাচীন স্থাপনা এবার জায়গা করে নিয়েছে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায়। বালি ও হ্রদের অসাধারণ মিশেলে গড়ে উঠেছে বাদাইন জারান মরুভূমি।
বাদাইন জারান মরুভূমি। ছবি: সংগৃহীত
উঁচু বালির টিলা ও পাহাড়ের মধ্যে অসংখ্য হ্রদের জন্য বিখ্যাত। এটি চীনের তৃতীয় বৃহত্তম মরুভূমি।
এছাড়া, চীনের উত্তর সাগরের উপকূলে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য চোংমিং ডংটান জলাভূমি। প্রায় ২২টি দেশ থেকে অথিতি পাখি এখানে আসে।
অতিথি পাখির অভয়ারণ্য চোংমিং ডংটান জলাভূমি। ছবি: সংগৃহীত
এই জলাভূমিতে বিশ্বের বিপন্ন ও বিরল প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। পাখিদের প্রজনন, বিশ্রাম ও আবাসের উপযুক্ত স্থান।
ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে জায়াগা করে নিয়েছে বেইজিং সেন্ট্রাল এক্সিস। একগুচ্ছ প্রাচীন ভবনের স্থাপনাগুলো রাজধানী বেইজিংয়ের মূল ভিতকে প্রদর্শন করে।
বেইজিং সেন্ট্রাল এক্সিস। ছবি: সংগৃহীত
চীনের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন নগরী। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৮ কিলোমিটার। এটি চীনা সভ্যতার অনন্য নিদর্শন।
প্রায় ৪০ বছর প্রচারণার পর বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পেল স্কটল্যান্ডের মিঠা পানির জলাভূমি। যেখানে আছে বিরল প্রজাতির পোকামকড়, পাখি ও উদ্ভিদ। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কার্বন মজুত আছে বিস্তীর্ণ এই অঞ্চলে।
স্কটল্যান্ডের মিঠা পানির জলাভূমি। ছবি: সংগৃহীত
এটি প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রকে স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করবে। স্কটল্যান্ডের উত্তরে ক্যাথনেস ও সাদারল্যান্ডের ফ্লো কান্ট্রি প্রায় ২ হাজার বর্গ কিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত।
ইতালির রোমের রাস্তার রানী নামে পরিচিত অ্যাপিয়ান ওয়ে এবার ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। যা প্রাচীন রোমানদের প্রথম মহাসড়ক এবং আধুনিক রোমের অন্যতম পর্যটন স্পট।
ইতালির রোমের রাস্তার রানী নামে পরিচিত অ্যাপিয়ান ওয়ে। ছবি: সংগৃহীত
৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক ৩১২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নির্মিত। মূলত এই সড়কের সংযোগ থেকেই শহর ও নতুন বসতি গড়ে ওঠে। যা রোমান ইঞ্জিনিয়ারদের উন্নত প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে তুলে ধরেছে।