রাজধানীর কলাবাগান, এখানকার সুপরিচিত একটি ফার্মেসি। চলমান পরিস্থিতিতে এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ না হলেও নেই ক্রেতার ভিড়। এরপরও যারা এসেছেন তারা দূরের বাসিন্দা। অলিগলির ওষুধের দোকান খোলা না থাকায় এসেছেন এই বড় ফার্মেসিতে। কয়েকদিনের সহিংস পরিস্থিতিতে জরুরি ওষুধ কেনার ঝুঁকি নিতে চাননি, বলছেন ক্রেতারা।
একজন ক্রেতা বলেন, ‘না ডাক্তার দেখাতে পারছি, না ওষুধ পাচ্ছি। এলাকার ফামের্সিতে ওষুধ না পেয়ে এখানে আসা। প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে কিছু ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে, আবার কিছু পাওয়া যাচ্ছে না।
আজিজ সুপার মার্কেটের পাশে ওষুধের পাইকারি ও খুচরা কিছু দোকান এখনও বন্ধ। বেশিরভাগ দোকান খোলা হলেও নেই ক্রেতাদের ভিড়। ওষুধ বিক্রি ২০ শতাংশে নেমেছে বলে দাবি বিক্রেতাদের। টানা তিন দিন ওষুধ কোম্পানি নিয়মিত সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারায় দরকারি প্রায় ২০-২৫ পদের ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে, বলছেন বিক্রেতারা।
বিক্রেতাদের একজন বলেন, 'তাৎক্ষণিকভাবে ২ দিন বন্ধ থাকায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ পদের ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে।'
আরেকজন বলেন, 'দৈনিক দু’বার ওষুধ ডেলিভারি দিতো। এখন চলমান পরিস্থিতির কারণে কোম্পানিগুলো ডেলিভারি দিতে পারছে না।'
বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও রোগীদের ভিড় না থাকায় ওষুধের দোকানে আনাগোনা কম রোগীদের। রাজধানীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দু'টি ফার্মেসি একটি বন্ধ রাখা হয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে নিরবচ্ছিন্ন ওষুধ উৎপাদনও ব্যাহত হয়েছে।
ওষুধ বাজার বিশ্লেষক ড. আবু জাফর সাদেক বলেন, 'যেহেতু সাপ্লাই চেইন এখন ব্যাহত। ঠিকমতো ডেলিভারি দিতে পারছে না বা মানুষ ঠিকমতো ওষুধ কিনতে পারছে না। যার ফলে প্রতিদিন ৩০-৪০ শতাংশ বিক্রি কমে যাচ্ছে।'
বছরে ৩২ হাজার কোটি টাকার ওষুধের বাজারে প্রতিদিনের বিক্রি প্রায় ৮৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে গেল চারদিনে বিক্রি অর্ধেকের নিচে নেমে আসায় অন্তত দেড়শো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
যেসব ফার্মেসি খোলা রয়েছে সেখানেও বিক্রি কমেছে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত। শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ওষুধ খাতে ক্ষতি ও মানুষের সীমাহীন শারীরিক ক্ষতি কমানো সম্ভব নয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।