বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত হওয়ার পর পানি জমে থাকা পাত্র জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলা হয় বাইরে। রাজধানীর আফতাবনগরের বহুতল ভবনের পিছনের অংশে দেখা যায় পাত্রে পানি জমে থাকা পানি জানালার বাইরে পড়ে আছে। আর এ থেকেই তৈরি হয়েছে এডিস মশার জন্মানোর পরিবেশ৷
বাইরের অংশ পরিস্কার থাকলেও আফতাব নগরের সেই বাড়িটির ভেতরেও দেখা যায় ময়লা-আবর্জনা জমে আছে বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে পাশের ভবনের সঙ্গে যুক্ত স্থানে প্লাস্টিকের ব্যবহৃত পাত্র দেখা যায়। যে পরিবেশে সময় পেলেই বাসা বাধবে এডিস মশা।
আফতাবনগরে ভবনের
জানতে চাইলে বার ভাড়াটিয়াদের ময়লা আবর্জনা ফেলার বিষয়ে সচেতন করা হয় বলে দাবি করেন বাড়ির কেয়ারটেকার।
তিনি বলেন, 'বাড়ির মালিক আমাকে বলেছেন যে কেউ যেন বাইরে এভাবে ময়লা না ফেলে, আমি ভাড়াটিয়াদের নিষেধও করেছি। কিন্তু তারপরও তারা ময়লা ফেলে। মাঝেমধ্যে আমি ওগুলো পরিস্কার করি।'
আফতাবনগরে বেশিরভাগ ভবনের নির্মাণকাজ চলছে, যেখানে বৃষ্টির পানি জমে এডিস মশা হতে পারে বলে শঙ্কায় আছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ব্যক্তি-পরিবার পর্যায়েও হতে হবে সতর্ক।
স্থানীয় একজন বলেন, 'ঝোপঝাড়, গর্ত, নর্দমা পরিস্কার করা হয় না। এখন বৃষ্টির সময়, এগুলোতে পানি জমে থাকে। এই সময় যদি নিয়মিত পরিস্কার রাখা যায় তাহলে মশার উৎপাদনটা কমবে।'
আবাসিকের মতো রাজধানীর ছোট-বড় সবখালেই দেখা যায়, এডিস মশার উপদ্রব। যেখানে খালের ওপরে পড়ে থাকা বিভিন্ন পাত্র পানি জমে রূপান্তর হয়েছে এডিসের লার্ভার কারখানা হিসেবে।
স্থানীয়রা বলছেন, দিনদিন অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে মশার উপদ্রব আর বৃষ্টি হলে সেই যন্ত্রণা বাড়ে কয়েকগুণ। সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তারা।
এডিস মশা নিধনের পাশাপাশি যাতে উৎপত্তি না হয়, তার জন্য জনসচেতনতা বাড়তে কাজ করছে জানালেন স্থানীয় কাউন্সিলর।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বলেন, 'মানুষের ভেতরে তেমন কোনো সচেতনতা নেই। সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আমরা মাইকিং করেছি, মানুষকে জানানো চেষ্টা করেছি। তারা নিজেরাই সচেতন না। এজন্য মশা বৃদ্ধি পাচ্ছে।'
জ্বর-ঠান্ডার মতো সমস্যা হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, মাঠ পর্যায়ে মশার উপদ্রব রোধ না করতে পারলে রোগী বাড়বে হাসপাতালে।
ডিএসসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালের পরিচালক কর্নেল এ কে এম জহিরুল হোসাইন খান বলেন, 'ডেঙ্গু রোগ ঠেকানোর জন্য আমাদের আসলে ৩ স্তরে কাজ করতে হবে। যারা মশক নিধনে আছেন তারা যেমন দায়িত্ব পালন করবেন, পাশাপাশি চিকিৎসা এবং জনগণের সচেতনভাবে অংশগ্রহণ করা দরকার।'
চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ছুঁইছুঁই, আর মশা বাহিত এই রোগে ভুগে মারা গেছেন ৪৬ জন।