২০২১ সালে স্থানীয় নির্বাচনে বিপর্যয়কর হারের পর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার পথে ছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্য ফিরেছে ২০২৪ সালের ৪ জুলাইয়ের নির্বাচনে। কনজারভেটিভ পার্টির ১৪ বছরের আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় বসলেন কেইর স্টার্মার। নবনির্বাচিত এই নেতা জানিয়ে দিয়েছেন, এবার লেবার পার্টির সময় এসেছে।
এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কেইর স্টার্মারকে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেছেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস। এর ফলে ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের নতুন বাসিন্দা হিসেবে নাম লেখালেন কেইর স্টার্মার।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, স্টার্মার নিজের দলকে স্থিতিশীল রাখতে বেশ সচেষ্ট ছিলেন। যেখানে কনজারভেটিভ পার্টিতে তখন নানা কোন্দল চলছিল। লেবার পার্টি নির্বাচনের আগ পর্যন্তই স্থিতিশীল নির্বাচনী প্রচারণায় বিশ্বাসী ছিল। কনজারভেটিভদের ইউটার্ন নীতি, নানা কেলেঙ্কারির মধ্যেও শান্ত থেকে দল পরিচালনা করে গেছেন তিনি।
কট্টরপন্থী লেবার পার্টি সমর্থক পরিবারের স্টার্মারের জন্ম লন্ডনে। বামপন্থী নেতা হিসেবে সারে শহরে রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। ইউনিভার্সিটি অব লিডস থেকে আইন বিভাগে পড়াশোনা শেষ করেন স্টার্মার। এরপর পড়াশোনা করেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আইনজীবী হিসেবে তার পারদর্শিতা মানবাধিকারে। ২০১৫ সালে সংসদে আসেন তিনি। কেবিনেটে খুব দ্রুতই গড়ে নেন নিজের অবস্থান, ব্রেক্সিট ইস্যুতে নজরে আসেন স্টার্মার। তবে সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর যাত্রাটা খুব সহজ ছিল না।
জেরেমি করবিন থেকে ২০২০ সালে লেবার পার্টির দায়িত্ব নেন তিনি। বামপন্থী করবিন ২০১৯ সালে নির্বাচনে হেরে যান। ২০২১ সালে স্টার্মারের দল হার্টলপুলে হেরে যায়। তখন থেকেই স্টার্মারের লক্ষ্য ছিল দেশের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা আর মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা। নির্বাচনে জেতার পর কেইর স্টার্মারকে সামলাতে হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অর্থনীতির এই করুণ পরিণতি।
স্টার্মারের নিজের দলের জন্য নীতি শক্তিশালী। কোনো নেতাই অপ্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে না তার দলের। নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় দেশের মানুষের জন্য কিছু অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি। ব্যবসা বেসরকারিকরণে না গিয়ে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে আগ্রহী তিনি। পাশাপাশি বাড়াতে পারেন করহার। যেন সরকারি খাত সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে, ব্যয় সংকোচন নীতি থেকে বের হতে পারে এই খাত।