কুমিল্লায় সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার ও সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে ২৪০ কোটি টাকা পায় পিডিবি। বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালীর ছয় জেলার সাড়ে ৮ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে পাহাড় সমান এ বিল আদায়ে সম্প্রতি অভিযানে নেমেছে পিডিবি। জুন মাস ধরে এ বিশেষ অভিযানে ৯০০টির বেশি সরকারি-বেসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পিডিবি।
এ অভিযানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় কুমিল্লার লাকসাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের। একইদিন বিচ্ছিন্ন করা হয় লাকসাম পৌরসভার হকার্স মার্কেট, অডিটরিয়াম ও পানি পরিশোধনাগারের বিদ্যুৎ সংযোগও। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ভোগান্তিতে পড়েন লাকসাম দৌলতগঞ্জের মাছ, মাংস ও কাঁচাবাজারসহ হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, নিয়মিত খাজনা ও যাবতীয় বিল পরিশোধ করলেও পিডিবিকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেননি পৌর কর্তৃপক্ষ ।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'পিডিবি বলছে ২০১৭ সাল থেকে ২৪ লাখের ওপর বিল পরিশোধ করা হয়নি। কিন্তু এটা আমরা জানি না। পৌরসভায় সব বিল দিয়েছি আমরা। শুধু কারেন্ট না, এর বাইরেও আরও যে বিল আছে তার সবই দিয়েছি।'
তবে পৌর মেয়র বলছেন, পিডিবির বকেয়া বিল পরিশোধ শুরু হয়েছে।
লাকসাম পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের বলেন, 'আমাদের কোনো অনাগ্রহ নেই। থাকলে আমরা সেটা করতাম না। আমাদের মন্ত্রী বলেছেন, যত দায়-দেনা আছে সব পরিশোধ করতে হবে, বিশেষ করে বিদ্যুৎ বিল। আমরা প্রায় ২৫ টাকা পরিশোধ করেছি। আর যে বিলগুলো আসছে আমর খুব দ্রুত এগুলো পরিশোধ করার চেষ্টা করবো।'
পিডিবি কুমিল্লা অঞ্চলের তালিকায় সবচেয়ে বেশি ২০ কোটি টাকা বকেয়া আছে চাঁদপুর পৌরসভায়। টাকার অংকে এ তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। এ করপোরেশনের কাছে ৯ কোটি টাকা পাওনা পিডিবি'র। এছাড়াও লক্ষ্মীপুর পৌরসভায় ৪ কোটি, ফেনী পৌরসভায় ৩ কোটি ও নোয়াখালী পৌরসভায় ১ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে দীর্ঘদিন।
পিডিবি বলছে, কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার প্রধান কারণ বিল পরিশোধে গ্রাহকদের অনাগ্রহ। অঞ্চল প্রধান মনে করেন, প্রিপেইড মিটার ব্যবহারে আগামীতে থাকবে না এ বকেয়া বিলের সংস্কৃতি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী প্রকৌশলী মো. তোফাজ্জল হোসেন প্রামানিক বলেন, 'আমরা প্রিপেইড বিল করার চেষ্টা করছি যেন গ্রাহকের বকেয়া না পরে। এ বছর আমরা সাড়ে ৭ লাখ গ্রাহককে এই মিটারে নিয়ে আসছি। এতে ভুল বা অতিরিক্ত বিল ও ভৌতিক বিলের কোনো সম্ভাবনা নেই।'
তবে সচেতন গ্রাহকদের অভিযোগ, পিডিবি'র একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হতে বকেয়া ফেলে রাখে কোটি কোটি টাকা।