প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ৩ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ ভিডিও গেমস খেলেন। এই শিল্প থেকে বর্তমানে বছরে রাজস্ব আয় হয় প্রায় ১৪০ বিলিয়ন ডলার। যা হলিউড, বলিউড কিংবা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির বাৎসরিক আয়ের সমান।
শুধু ভিডিও গেমস যারা খেলেন তাদের থেকেই যে এই আয় হচ্ছে তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন মাধ্যমে যারা ভিডিও গেমসের ধারণকৃত ভিডিও দেখেন তারাও এই আয়ের একটি অংশ।
ভিডিও গেমস সবচেয়ে বেশি খেলে থাকে তরুণরা। তাই তরুণ প্রজন্মকে সচেতন করা তোলার মাধ্যম হিসেবে যদি ভিডিও গেমসকে কাজে লাগানো যায়, তবে ইতিবাচক বৈশ্বিক পরিবর্তন জটিল কোনো ব্যাপার হবে না বলে ধারণা জাতিসংঘের।
বিশ্বের বৃহত্তম ২৫টি গেম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির সাথে মিলে জাতিসংঘ একটি জোট গঠন করে। উদ্দেশ্য খেলোয়াড়দের জলবায়ু সংকট সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। ‘প্লেয়িং ফর দ্য প্লানেট’ নামের এই জোটে মাইক্রোসফট, পিক্সেলভেরির স্টুডিও, স্পেস অ্যাপসসহ খ্যাতনামা গেমিং কোম্পানিগুলো যুক্ত হয়েছে। জোটের সদস্যরা গেমগুলোতে সবুজ পরিবেশ যুক্তকরণ, তাদের নির্গমন হ্রাসে উদ্যোগ গ্রহণ এবং বিশ্বজুড়ে পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পর্দাজুড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে রঙিন পাখি। গাছের শাখায় ছিমছামভাবে বাসা বাঁধা পাখি পরিবারের রূপালী পালক নজর কাড়ে ভিডিও গেমারদের। আপনি যদি অ্যালবা: আ ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাডভেঞ্চার গেমটি খেলেন তাহলে আপনি পাখি, বাগান এমনকিছু প্রাকৃতিক দৃশ্যই দেখতে পাবেন।
পিক্সেলভেরির চয়েজেস গেমটি এক তরুণীকে কেন্দ্র করে তৈরি। যে তার উপকূলীয় গ্রাম ছেড়ে আসে কারণ সেখানে প্রচুর মাছ মারা যাচ্ছিল। মাছ মারা যাওয়ার এই ভয়াবহতার সাথে জলবায়ু পরিবর্তনের সংযোগ রয়েছে। চয়েজেসে খেলোয়াড়েরা জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির প্রচেষ্টা চালায়।
২০২০ সালে ভিডিও গেমসের বেশ বড় কয়েকটি কোম্পানি তাদের তৈরিকৃত জনপ্রিয় গেমসগুলোয় পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক মিশন এবং পরিবেশ সচেতন বিষয়ক বার্তা যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করে। এই তালিকায় আছে অ্যাংরি বার্ডস, গলফ ক্ল্যাশ, সাবওয়ে সারফেসের মতো জনপ্রিয় গেমগুলো।
ভিডিও গেমস কোম্পানিগুলো আশা করছে, নতুন এই সংযোজন খেলোয়াড়দের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন করা এবং বিপন্নপ্রায় প্রাণী যেমন- নেকড়ে, পাখি, মাছ রক্ষার উদ্যোগে শামিল করতে সহায়তা করবে।