এশিয়া
বিদেশে এখন

এভারেস্ট থেকে নেপালের আয় ৭০ কোটি রুপি

এভারেস্টে কেন এত মৃত্যু?

প্রতি মৌসুমে এভারেস্ট থেকে নেপালের আয় ৫০ থেকে ৭০ কোটি রুপি। যদিও পর্বত আরোহণ যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যয়বহুল। সেই সঙ্গে প্রয়োজন হয় বিভিন্ন প্রস্তুতি ও মানসিক দৃঢ়তার। চূড়ায় উঠতে গিয়ে প্রতিবছরই প্রাণ হারান অনেক আরোহী।

প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৮০০ পর্বতারোহী হিমালয় পর্বতের সর্বোচ্চ চূড়া মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে যান। তাদের মধ্যে খুব অল্পসংখ্যক আরোহী তা জয় করতে পারেন। এ পর্যন্ত এভারেস্ট জয় করেছেন ৮ হাজারের বেশি মানুষ। ১৯৫৩ সালে যৌথভাবে নেপালের শেরপা তেনজিং নোরগে ও এডমন্ড হিলারি সর্বপ্রথম এভারেস্ট পর্বত জয় করেন। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে এখন উড়ছে বাংলাদেশের পতাকাও।

ছয়জন বাংলাদেশি এখন পর্যন্ত এভারেস্টের চূড়া ছুঁয়েছেন। মুসা ইব্রাহিমের হাত ধরেই পর্বতবিজয়ী দেশের তালিকায় উঠে আসে বাংলাদেশের নাম। প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্টের চূড়ায় লাল-সবুজ পতাকা ওড়ান নিশাত মজুমদার। তালিকায় আছেন এম এ মুহিত, ওয়াসফিয়া নাজরীন। ২০১৩ সালে এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে প্রাণ হারান খালেদ হোসেন। সম্প্রতি এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী।

এভারেস্ট যাত্রা যেমন ব্যয়বহুল তেমন বিপদসংকুলও। বৈরি আবহাওয়ায় ২৯ হাজার ২৯ ফুট উচ্চতায় উঠতে শারীরিক ও মানসিক প্রশিক্ষণ জরুরি। পর্বত আরোহণের কৌশল, যন্ত্রপাতির ব্যবহার ও কারিগরি বিষয়গুলোর ওপর ভারতে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে একজন আরোহীর খরচ হয় ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি রুপি।

যথাযথ প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণের অভাবে প্রতি বছরই ঘটে নানা দুর্ঘটনা। গত দুই দশকে এভারেস্টে আরোহণ করতে গিয়ে প্রতি বছর গড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন আরোহী। বিশ্বের সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ পেশা ধরা হয় শেরপাদের কাজকে। বৈরী আবহাওয়া ও প্রচণ্ড তুষারপাতের কারণে বিপদসংকুল এই অভিযান।

মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানের উপযুক্ত সময় মার্চ থেকে মে মাস। নেপালে বসন্ত মৌসুমে এভারেস্টের আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে থাকে। তবে অতিরিক্ত পর্বতারোহীর কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বেড়েছে। সম্প্রতি পর্বত আরোহীর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে নেপাল সরকার। ২০২০ সালে করোনার কারণে এভারেস্টে আরোহণ বন্ধ ছিল।

তিব্বত এবং নেপাল দুই দিক থেকেই এভারেস্ট চূড়ায় উঠা যায়। খরচ কিছুটা কম হওয়ায় এভারেস্ট অভিযানে জনপ্রিয় রুট নেপাল। তবে অভিযানে দরকার হয় নানা রকম সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির। সূর্যের তীব্র রশ্মি ও তুষারের প্রতিফলন থেকে সুরক্ষার জন্য দরকার চশমা ও হেলমেট। তীব্র ঠান্ডার জন্য জ্যাকেট, বরফের মধ্যে হাটার জন্য বিশেষ জুতাসহ আরও বেশকিছু জিনিস।

মাউন্ট এভারেস্ট জয়ে সময় লাগে প্রায় দুই মাস। ১৭ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত বেস ক্যাম্পে যেতে লাগে দুই সপ্তাহ। এরপর ক্যাম্প ওয়ান থেকে ক্যাম্প থ্রিতে পৌঁছাতে পাড়ি দিতে হয় ৭ হাজার ফুট পথ। ২৬ হাজার ফুট উচ্চতায় ক্যাম্প ফোরের উপরের অংশকে বলা হয় ডেথ জোন। বিপদজনক হলেও প্রতি বছরই বাড়ছে এভারেস্ট অভিযানের সংখ্যা।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর