কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
দেশে এখন
0

তাপপ্রবাহের পর ঝড়ে দিশেহারা বাগান মালিক-ব্যবসায়ীরা

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে দিনাজপুরে কয়েক কোটি টাকার লিচু ঝরে পড়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহের পর এই ক্ষতিতে মাথায় হাত পড়েছে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের। পুরো জেলায় কত টাকার ক্ষতি হয়েছে তার সঠিক হিসাব জানতে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।

গত বুধবার (২৯ মে) রাতে দিনাজপুর শহরজুড়ে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে পড়ে যায় অনেক গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি, বাড়ি ঘরের দেয়াল। রাতের দেড় ঘন্টার ঝড়ো হাওয়ায় লণ্ডভণ্ড হয়েছে দিনাজপুর।

এই ঝড় থেকে রেহাই পায়নি চলতি সময়ের অন্যতম সুস্বাদু ফল লিচু বাগানও। শুধু ডালপালাই নয়, ভেঙেছে আস্ত গাছ পর্যন্ত। এমনিতেই তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে এবছর লিচুর ফলন কম। তার ওপর এই ঝড়ে মাথায় হাত পড়েছে বাগানিদের। তাদের দাবি ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ লিচু নষ্ট হয়ে গেছে ঝড়ে।

একজন বাগান মালিক বলেন, 'এই ঝড়ের বাতাস যে দিক দিয়ে গেছে, সেখানে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এবার তো এমনিতেই লিচুর ফলনের পরিমাণ কম। তারমধ্যে এই ঝড়ে অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। অনেক গাছেরই মাঝখান দিয়ে ভেঙ্গে গেছে।'

ঝড়ে লিচু নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। এমনিতেই দাম চড়া, ঝরে পড়া লিচুর দাম কম হলেও অন্যগুলো বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। প্রতি একশ' মাদ্রাজি লিচু ৩৫০ আর বেদানা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়।

একজন বিক্রেতা বলেন, 'ঝড়ের কারণে লিচু পড়ে যাওয়ায় লিচুর দাম কম।'

ঝড়ে শুধু লিচুর কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এই তথ্য এখনও পুরোপুরি নিরূপণ করতে পারেনি কৃষি বিভাগ। তবে দিনাজপুরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার লিচুর বাজারের ৩০ ভাগ নষ্ট হলে সেই অংক অন্তত ২০০ কোটি টাকারর বেশি। প্রশাসন বলছে, যেহেতু ঝড়ের তীব্রতা বেশি ছিল, তাই কয়েকদিন লাগবে সব ক্ষতি নিরুপনে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া হবে ক্ষতিপূরণ।

দিনাজপুর সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হান বলেন, 'আমাদের প্রায় দেড় হাজার বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর সাথে আনুমানিক সাড়ে ৮ হাজারের মতো গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি বিভাগের থেকে জানতে পেরেছি প্রায় ২০০ মেট্রিক টন লিচু ঝড়ে পড়ে গেছে।'

এ যেনো মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। গত কয়েকদিন আগে তীব্র তাপপ্রবাহে লিচুর গুটি নষ্ট হয়ে গেছে। আর বুধবারের কালবৈশাখীতে শতশত লিচু গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ে আছে পুরো দিনাজপুর জেলায়। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা।

এসএস