পরিবেশ ও জলবায়ু
দেশে এখন

উপকূলে আঘাত হেনেছে রিমাল, পটুয়াখালী-সাতক্ষীরায় দু’জনের মৃত্যু

বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। আজ (রোববার, ২৬ মে) সন্ধ্যায় পটুয়াখালী, বরিশাল ও সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকায় রিমালের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হয়। এতে এসব অঞ্চলে মাঝারি ঝড় ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এদিকে উপকূলবর্তী দুই জেলায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১২ থেকে ১৪ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে আসছে। উপকূলে এখন যে প্রভাব পড়ছে সেটি ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগের।

সংস্থাটি জানিয়েছে, এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্র উপকূল হয়ে ভূমিতে প্রবেশ করবে ঘূর্ণিঝড়টি। মধ্যরাতের মধ্যেই পুরো ঝড়টি উপকূল পেরিয়ে যাবে। এরপর ধীরে ধীরে ঝড়টি নিস্তেজ হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর আশপাশ এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'রিমাল' উত্তর দিক হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

সংস্থাটির সর্বশেষ এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূণিঝড়টি বিকাল নাগাদ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আজ রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে মোংলার পাশ দিয়ে খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করবে। সে সময় এর গতিবেগ থাকবে ৯০ কিলোমিটার থেকে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জানানো হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং দ্বীপ ও চরগুলোতেও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে।

এদিকে সাতক্ষীরা শ্যামনগরে ঝড়ের মধ্যে না‌পিতখা‌লি আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকাত মোড়ল (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীর কলাপাড়ার অনন্তপাড়া গ্রামে স্বজনদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে পানির স্রোতের ভেসে মো. শরিফুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুকের মৃত্যু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চল ছাড়াও কুষ্টিয়া, রাজশাহী, হবিগঞ্জ, বগুড়াসহ বেশ কিছু জেলায় সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টিপাত চলছে।

ঝড় সর্তকীকরণ কেন্দ্রের প্রধান ড. শামিম হাসান ভূইয়া বলেন, 'উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৭ ঘণ্টা তাণ্ডব চালানোর পর বাংলাদেশে ঢুকবে রিমাল। তখন সারাদেশেই বৃষ্টি হবে। মূলত ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টিপাত থাকবে আগামীকাল সারাদিন।'

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝালকাঁঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেড়েছে। যা বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সন্ধ্যার পর থেকে জেলার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অঞ্চলের অন্যান্য নদীর পানি ও বিপদসীমার ওপরে রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরিশাল-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর