চলতি বছরই বোয়িংয়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। সম্প্রতি সেই ইস্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে ডেইলি মেইল। যেখানে জানানো হয়, বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে কোম্পানির ৭৭৭ সিরিজের বিভিন্ন মডেলের বিমানের জ্বালানির ট্যাঙ্কে আগুন ধরে বিস্ফোরণ হতে পারে। আরও বলা হয়, উড়োজাহাজের পাখায় ফুয়েল ট্যাঙ্কের ফাঁকা স্থানে একটি ধাতব প্লেট আছে, যেখানে কোনো বৈদ্যুতিক সংযোগ নেই। সেখানে স্থির বিদ্যুৎ তৈরি হয়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
এফএএ জানায়, উড়োজাহাজগুলোর ত্রুটি সারাতে বোয়িংয়ের খরচ পড়বে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ডলার, যেখানে এই প্রতিষ্ঠানের বাজারমূল্য ১১ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার। বিদ্যুতায়িত হয়ে আগুন ধরার ত্রুটি সারাতে প্রতি বিমানের জন্য খরচ পড়বে ৯৮ ডলার।
এখন প্রায় ৩০০ উড়োজাহাজ এই ঝুঁকিতে রয়েছে, যেগুলোর বেশিরভাগই ব্যবহার করছে ইউনাইটেড আর আমেরিকান এয়ারলাইন্স। বোয়িংকে অনেক আগেই এই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বলছে, আকাশপথে ভ্রমণ নিরাপদ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে এফএএ। এখানে জরুরি ভিত্তিতে ফ্লাইটে কোনো নিরাপত্তা ইস্যুর কথা বলা হয়নি। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক প্রতিক্রিয়া থেকে বিমানকে নিরাপদ রাখতে আধুনিক বিমানগুলোতে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলেও জানিয়েছে বোয়িং কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, গেলো ৩০ বছর ধরে নিরাপদে আকাশে উড়ছে ৭৭৭ সিরিজের বিমান, এখন পর্যন্ত ৩'৯০ কোটি যাত্রীকে সেবা দিয়েছে তারা।
বিশ্বের সর্বাধিক নির্মিত বৃহদাকার উড়োজাহাজগুলোর একটি ৭৭৭। ১৯৯৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই সিরিজের ১ হাজার ৮০০ মডেল বিভিন্ন এয়ারলাইন্সকে দেয়া হয়েছে। ছোট যাত্রীবাহী বিমানগুলোর তুলনায় এই সিরিজের বিমানে যাত্রীদের ভ্রমণের রেকর্ড নিরাপদ।
যাত্রী ভ্রমণে নিরাপত্তা নিয়ে গেলো কয়েক বছর ধরেই টালমাটাল অবস্থায় পড়েছে বোয়িং। ২০১৮ আর ২০১৯ সালে দুটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রায় সাড়ে ৩০০ মানুষের মৃত্যুর পর অনেক দিন আকাশে উড্ডয়ন বন্ধ ছিল ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের বিমানের। চলতি বছর মাঝ আকাশে দরজা উড়ে যাওয়া আর ইঞ্জিনে আগুন লাগার মতো দুর্ঘটনায় আবারও আলোচনায় আসে বোয়িং।