খরতাপে পোড়া শহরে কোলাহল নেই তেমন। অলিগলিতে কুকুরের হাঁকডাক। আর ফাঁকা রাজপথ ধরে ছুটে চলা দু'একটি বাহন।এমন রাতেও সড়কের আশেপাশে বহু মানুষের বিচরণ। নির্ঘুম চোখ তাদের। গল্প, হুল্লোড় আর জাগতিক খুনসুঁটিতে কাটছে ক্ষণ।দেখে মনে হতে পারে কি দারুণ সময় রাত্রির অবসরে। তবে কথায় কথায় ধরা পড়ে, শারীরিক অস্বস্তির সঙ্গে মানসিক বিরক্তি।
গ্রীষ্মের তীব্র উত্তাপে পুড়ছে সারাদেশ। ঢাকায় দিনে সূর্যের প্রখর তাপে থার্মমিটারে পারদ চড়ছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। রাতে অবশ্য সেই বিড়ম্বনা নেই। উল্টো বৈশাখের পূর্ণ চাঁদ নরম আলোর জোছনা বিলায় আকাশে। মাঝেমধ্যে গাছের পাতা কেঁপে কেঁপে সাড়া দেয়। জানায়, নগর ভরে আছে দখিনা বাতাসে। তবে সেই হাওয়া গরীবের আঁটোসাটো ঘরে পৌঁছায় না। তাকে ধরতে নামতে হয় সড়কে।
নগরের বাসিন্দাদের একজন বলেন, 'ঘরে প্রচুর গরম। গরমে ঘরে থাকতে না পেরে বাহিরে এসেছি। বাচ্চারা ঘরে থাকতে পারছে না।'
শহরের উপরতলার মানুষেরা যখন তাপানুকূল রুমে প্রশান্তির ঘুমে মগ্ন, নিম্নবিত্তের তখনও ভরসা প্রাকৃতিক বাতাসে। বস্তির টিনের ঘরে বৈদ্যুতিক পাখার হাওয়া শরীর শীতল করতে পারে না। ঘামে আর গরমে তাই ঘুম আসে না। একারণে ঘর ছেড়ে গভীর রাত অবধি বাইরে ঘোরাঘুরি চলে। যার প্রভাব পড়ে দৈনন্দিন কাজে।
শহরের কয়েকস্থানে দেখা মিললো ফুটপাতে ছাউনি দিয়ে থাকা শ্রমিকেরা দলবেঁধে সড়কে ঘুমাচ্ছেন। অর্থ-বিত্তে সুখ কিনতে ব্যর্থ এসব মানুষকে প্রকৃতি একেবারে নিরাশ করছে না। বহমান হাওয়াতে শরীরে প্রশান্তি মিলছে নিশ্চয়ই। নয়তো খোলা আকাশের নিচে শান্তির ঘুম, আদৌও কি আসে অট্টালিকায় বাস করা নাগরিক কল্পনায়।