আফ্রিকা
বিদেশে এখন
0

বিলীন হচ্ছে কোকা বাগান, চকলেটের দাম বাড়ার শঙ্কা

জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবে এমনিতেই হুমকির মুখে আফ্রিকার দেশ ঘানার কোকো উৎপাদন। তারওপর অবৈধভাবে বাগান দখল করে স্বর্ণের খনি সম্প্রসারণ করায় দুশ্চিন্তায় চাষিরা। পাশাপাশি অস্তিত্ব সংকটে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ এ শিল্প। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে কোকোর দাম আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা। যার প্রভাব পড়তে পারে চকলেটের দামেও।

বিশ্বের চকোলেট বাজারে ৪০ শতাংশের বেশি আধিপত্য করে জার্মানি, বেলজিয়াম, ইতালি ও পোল্যান্ড। তবে মজার ব্যাপার হলো চকলেটের প্রধান উৎপাদকদের কেউই, এর প্রধান উপাদান কোকোর শীর্ষ উৎপাদক নয়। পশ্চিম আফ্রিকার কৃষকদের হাতে উৎপাদন হয় বেশিরভাগ কোকো। এরমধ্যে বৈশ্বিক ফলনের প্রায় ৬০ শতাংশ অবদান রাখে ঘানা এবং আইভরি কোস্ট। তবে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে উৎপাদন কমেছে কোকোর। যার কারণে বিশ্ববাজারে তিন মাসে দেড়শ' শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে টনপ্রতি কোকোর দাম ছাড়িয়েছে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার।

২০২৩ সালের মার্চের পর কোকোর দাম।

বৈরি আবহাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিশ্ববাজারে যখন কোকোর সংকট চরমে, তখন ঘানার হাজার হাজার হেক্টর কোকো বাগান ধ্বংস করে অবৈধভাবে সোনার খনি সম্প্রসারণে মেতেছে একটি চক্র। এর জন্য প্রথম ধাপে ফলন কমানোর জন্য কোকো বাগানে ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি মৃত্যুর হুমকিও পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অনেক চাষি। এতে আয়ের একমাত্র উৎস হারিয়ে জীবন-জীবিকা নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা।

আরেকজন বলেন, 'প্রথমে কিছু কোকো গাছ ধ্বংস করলে তাদের বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ করি। পরে রাতে আমার বাড়িতে এসে মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ, আমরা এখনও বেঁচে আছি।'

এভাবে চলতে থাকলে কোকো চাষের অধীনে থাকা ঘানার ১৩ লাখ হেক্টরের বেশি জমি হুমকিতে পড়বে। এতে চকলেটের দামও বাড়বে বলে মনে করছে ঘানার কোকোবোর্ড।

ঘানার কোকোবোর্ডের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর ফিফি বাউফোর বলেন, 'যদি ধ্বংস হওয়া খামারের সংখ্যা বিবেচনা করা হয় তাহলে দেখা যাবে এর প্রভাব বিশাল। কারণ উৎপাদন অনেক কমেছে। তবে এটা শুধু অবৈধভাবে সোনার খনি সম্প্রসারণের হচ্ছে এটা বলা কঠিন। কিন্তু সত্যি যদি অবৈধ খনি খননের কারণে এসব খামার নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আমাদের এই শিল্পের উপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। যা মোকাবিলা করতে ইতোমধ্যেই আমরা সংগ্রাম করছি।'

কোকো চাষের অধীনে থাকা ঘানার ১৩ লাখ হেক্টরের বেশি জমি।

এ অবস্থায় আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে ৬ হাজার কোটি ডলার এবং বিশ্বব্যাংকের আরও ২ হাজার কোটি ডলার সাহায্যের অর্থ দিয়ে ঘানার ক্ষতিগ্রস্ত বাগানগুলো পুনর্বাসনে খরচ করার উদ্যোগ নিয়েছে কোকোবোর্ড। তবে ক্ষতিকর ভাইরাসে আক্রান্ত ৫ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর বাগানের মধ্যে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় থাকছে মাত্র ৬৭ হাজার হেক্টর বাগান।

ইএ