দেশে এখন
0

জলদস্যু দলনেতার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, নাবিকরা সুস্থ আছেন: নৌপরিবহন ডিজি

বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও নাবিকদের অপহরণ করা জলদস্যুদের দলনেতার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম। বুধবার (২০ মার্চ) এখন টিভির কাছে এসব কথা জানান তিনি।

গত কয়েক দিন ধরেই অপহরণ করা জাহাজটির জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগের সব ধরনের চেষ্টা করা করছে বাংলাদেশ। এমনকি ‘থার্ড পার্টির’ মাধ্যমেও অপহৃত জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে জোর তৎপরতার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে।

দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ প্রসঙ্গে কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম এখন টিভিকে জানান, জলদস্যুদের একজন দলনেতার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে বাংলাদেশের। জাহাজটিতে থাকা নাবিক ও ক্রুরা ভালো আছেন বলেও জানান এই ডিজি।

তিনি বলেন, 'জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়া থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে। এই মুহূর্তে জাহাজে খাবার এবং পানির কোনো সমস্যা নেই।'

ছিনতাই হওয়া জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধার প্রসঙ্গে মোহাম্মদ মাকসুদ আলম বলেন, 'জাহাজে অবস্থিত নাবিকরা নিরাপদে দেশে ফিরে আসবে এটাই বাংলাদেশের প্রত্যাশা এবং সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে সরকার।'

সোমালিয়ান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জাহাজটি উদ্ধারের জন্য অভিযান চালাতে চাচ্ছে। এমন তথ্য গত দুদিন ধরে শোনা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে নৌপরিবহন ডিজি বলেন, 'যেহেতু জাহাজের নাবিকরা সবাই বাংলাদেশি এবং জাহাজটি বাংলাদেশের। সোমালিয়ান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জাহাজে অভিযান চালাতে হলে বাংলাদেশের অনুমতি লাগবে।’

গত ১২ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে কয়লাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। দক্ষিণ আফ্রিকার মুজাম্বিকের মাফুতু বন্দর থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে জাহাজটি শারজার হামারিয়া বন্দরে যাচ্ছিল। পথে সশস্ত্র সোমালিয়ান জলদস্যুরা হাই স্পিডবোটে এসে জাহাজটিতে উঠে পড়ে এবং নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

ক্যাপ্টেনসহ ২৩ নাবিককে জিম্মি করা হয়। স্বজনদের সঙ্গে নাবিকরা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার পর সবার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়।

এ কয়দিন নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগসহ ও অন্যান্য কিছু সুবিধা দিলেও সর্বশেষ গত তিন দিনে দস্যুরা সেটিও বন্ধ করে দিয়েছে। এতে নাবিকদের পরিবার ও স্বজনদের মাঝে বেড়েছে উৎকণ্ঠা।

যোগাযোগ না থাকলেও জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণের থাকা জাহাজের সর্বশেষ অবস্থান মনিটর করা হচ্ছে। নৌপরিবহন অধিদপ্তরের পাশাপাশি বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনও (বিএমএমওএ) জাহাজটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে।

দস্যুরা জাহাজটিকে নিয়ে কয়েক দফায় ভারত মহাসাগরে স্থান পরিবর্তন করেছে। গতিপথ ও অবস্থানের বিষয়ে বিএমএমওএ বলছে, জাহাজটি জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর প্রথমেই তারা বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজটিকে দেড় দিনের মাথায় সোমালিয়া উপকূলের কাছাকাছি নিয়ে যায়।

পরদিন নেয়া হয় সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু উপকূলের কাছাকাছি অবস্থানে। পরবর্তীতে সেটিকে আরও উত্তর দিকে সরিয়ে প্রথমে নেয়া হয় গারদাকে। তবে ভারতীয় নৌবাহিনী জাহাজটি ঘিরে নজরদারি বাড়ালে সেটি আবারও সরিয়ে নেয়া হয় গদবজিরান উপকূলে।

সর্বশেষ গত তিনদিন ধরে জাহাজটি একই জায়গায় নোঙ্গর করে আছে বলে জানিয়েছে বিএমএমওএ। তারা বলছে, বর্তমানে জাহাজটি গদবজিরান শহর থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে।