বিদেশে এখন
0

১৯ এপ্রিল শুরু ভারতের জাতীয় নির্বাচন

২০২৪ সালের ভারতের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন মোদি সরকারকে নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে মোদি সরকারের তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নিয়ে। নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আসছে ১৯ এপ্রিল শুরু হতে যাচ্ছে ভারতের লোক সভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। দীর্ঘ ৪৪ দিনের ভোট গ্রহণ শেষে ৪ জুন জানা যাবে চূড়ান্ত ফলাফল।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। শনিবার (১৬ মার্চ) বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশনার রাজিব কুমার জানান, আসছে ১৯ এপ্রিল থেকে ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ-লোকসভার ৫৪৩ টি আসনে সাত ধাপে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। দ্বিতীয় ধাপে ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় ধাপে ৭ মে, চতুর্থ ধাপে ১৩ মে, পঞ্চম ধাপে ২০ মে, ষষ্ঠ ধাপে ২৫ মে ও সপ্তম ধাপে পহেলা জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আর ৪ জুন জানা যাবে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল।

ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজিব কুমার বলেন, 'গত বছরের মতো এবারও সাত ধাপে ভোট গ্রহণ হবে। ২০ মার্চ গেজেট থেকে শুরু হবে। প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৩০ মার্চ। আর ১৯ এপ্রিল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু।'

নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'এক্সে' দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, তার সরকার সুশাসনের প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ১০ বছর দেশ শাসন করেছে। এবারের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন সরকার জনগণের রায় পাবে বলে প্রত্যাশা তার। বিজেপি সরকার এবারের নির্বাচনে ৩৭০টি আসনে জয়লাভ করবে বলে আশা করছে।

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম 'টাইমস অব ইন্ডিয়া'। সেখানে বলা হয়, ২০২৪ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে যে বিষয়গুলো বড় প্রভাব ফেলবে তার মধ্যে রয়েছে নরেন্দ্র মোদির রাম মন্দির ঘিরে রাজনীতি। উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় নির্মিত এ মন্দিরটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে রামের জন্মস্থান বলে পরিচিত হওয়ায় ১৯৯২ সালে সেখানে থাকা ঐতিহ্যবাহী বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হয়। আর ২০১৯ সালের আদালতের রায় অনুযায়ী সেখানে নির্মাণ করা হয় রাম মন্দির। ২০২০ সালে নরেন্দ্র মোদি এর নির্মাণ শুরু করেন।

ভারতের জিডিপির ওপর নয়, বরং সরকার কীভাবে অর্থনীতির চাকা সচল রাখছে তার ওপর নির্ভর করে সরকারের জনপ্রিয়তা। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বেশিরভাগ মানুষ মোদি সরকারের আমলে সচ্ছল দিন কাটাচ্ছে বলে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও ভারতের খুচরা বাজারে এর খুব একটা প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ মোদি সরকার নিয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে টানা কয়েক মাস খাদ্যশস্য দেশের বাইরে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি, খুচরা বাজারে জ্বালানি তেলের দাম স্থির রাখা, এলপিজির দাম কমানোসহ বিভিন্নভাবে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখার চেষ্টা করেছে মোদি সরকার।

এছাড়াও নির্বাচনের মাত্র মাসখানেক আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাস্তবায়ন ভূমিকা রাখবে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে মোদির জনপ্রিয়তা বাড়াতে। এই আইনের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের দলিত শ্রেণী ও আসামে বাংলা ভাষাভাষীরা লাভবান হবে।

জনপ্রিয়তা বাড়াতে মোদি অনেক কাজ করলেও দেশের বেকারত্ব দূর করায় খুব একটা চমক দেখাতে পারেননি তিনি। লেখাপড়া শেষ করেও চাকরি না পেয়ে হতাশায় দিন কাটাচ্ছে ভারতের যুব সমাজের বড় একটা অংশ।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, এবারের নির্বাচনের মোট ভোটার প্রায় ৯৭ কোটি। যার মধ্যে ৪৯ কোটি পুরুষ ও ৪৭ কোটি নারী ভোটার। আর তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি।

ইএ