সকাল থেকেই কারখানায় কলসভর্তি দুধ নিয়ে হাজির খামারিরা, যা ওজন করে বুঝে নেন দোকানিরা। এই দুধ জ্বাল দিয়ে কিছুটা ঘনত্ব আসলেই তা থেকে ছানা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা থেকে হয় সন্দেশ আর রসগোল্লা। পরে কড়াইয়ের রসে আরও জ্বালিয়ে ঠাণ্ডা করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়।
১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জের বসন্ত দত্তের হাত ধরে ঐতিহ্যবাহী দত্ত মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের যাত্রা শুরু হয়। ধীরে ধীরে তাদের রসগোল্লা ও সন্দেশের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
এক খামারি বলেন, ‘এই দোকানে ৮০ থেকে ৯০ কেজি দুধ দিই। আমার মতো অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে দুধ নিয়ে আসে।’
এক কর্মচারী বলেন, এখানে আমরা ১৬ জন একসঙ্গে কাজ করি। কারখানা বড় হলে আরও অনেকের কাজের সুযোগ তৈরি হবে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও এই রসালো মিষ্টির কদর রয়েছে। সুস্বাদু এই মিষ্টি খেয়ে খুশি স্থানীয় ক্রেতারা। তারা বলেন, ‘পারিবারিক আয়োজন কিংবা যেকোন উৎসবে এই মিষ্টির চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে যায়। এই মিষ্টি আমাদের ঐতিহ্য।’
গত ৮ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের রসগোল্লাকে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। এবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পথ ধরে দেশীয় ব্র্যান্ডের পাশাপাশি বিশ্ব বাজারে জায়গা করে নেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, ‘জিআই পণ্যের স্বীকৃতি আমাদের জন্য গৌরবের। গোপালগঞ্জের মানুষ হিসেবে আমরা গর্ববোধ করছি।’
দ্ত্ত মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী সবুজ দত্ত বলেন, আমরা অত্যন্ত গর্বিত। আমাদের রসগোল্লা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা গরুর দুধ দিয়ে ভেজালমুক্তভাবে মিষ্টি তৈরি করি। ঐতিহ্য ধরে রাখতে মিষ্টির মান ও স্বাদ নিশ্চিতের আশ্বাসও দেন তিনি।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, ‘পর্যটকদের কাছে এই মিষ্টি যাতে পৌঁছে যায় সেজন্য উদ্যোগ নিয়েছি। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে টুঙ্গীপাড়ায় দত্ত মিষ্টান্ন ভান্ডারের আরও একটি আউটলেট করা হবে।’
দত্তের মিষ্টির দোকানে প্রতিটি ছোট আকারের রসগোল্লা ১০ টাকা আর বড় আকারের ২০ টাকায় বিক্রি হয়। আর প্রতি পিস সন্দেশ ২০ টাকা।