অর্থনীতি , নগর কৃষি
কৃষি
0

বারি-৫ পেঁয়াজে দারুণ সম্ভাবনা

ছাদ বাগানে ট্রে, ড্রাম বা ফুলের টবে হচ্ছে পেয়াঁজ চাষ ও বীজ উৎপাদন। পরীক্ষামূলক চাষে ভালো ফল পেয়েছে মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। ৩ মাসে পাওয়া যাচ্ছে আড়াইশ' থেকে ৩শ' গ্রাম ওজনের একেকটি পেয়াঁজ।

ছাদে পেঁয়াজ চাষ করে মাত্র তিন মাসে এমন ফল পেয়েছেন বগুড়ার মসলা গবেষণা কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী নুর আলম চৌধুরী| সহকর্মীদের সাথে নিয়ে নিজ কার্যালয়ের ছাদে এগুলো চাষ করেছেন তিনি। এখানকার বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাইলে যে কেউ বাসা-বাড়ির ছাদ, বাড়ির উঠোন এমনকি জমিতেও সারাবছর বাণিজ্যিকভাবে করতে পারেন গ্রীষ্মকালীন বারি-৫ জাতের এ পেয়াঁজের চাষাবাদ।

বগুড়ার মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোছা. শামসুন্নাহার বলেন, 'বাড়িতে করতে চাইলে অবশ্যই উঁচু জায়গা আমাদের নির্বাচন করতে হবে। ছাদ বাগান করতে চাইলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। অর্গানিক জৈব মিশ্রিত মাটি হতে হবে।'

কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, বছরে প্রায় ৪০ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে দেশে উৎপাদন হচ্ছে সাড়ে ৩৪ লাখ টন পেয়াঁজ। বাকিটা আমদানি করতে হয়। আর এতে ব্যয় হয় বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। বিজ্ঞানীরা বলছেন গ্রীষ্মকালীন এই পেয়াঁজ ঘাটতি পূরণে যেমন ভূমিকা রাখতে পারে তেমনি এখান থেকে চাষিরা নিজেই উৎপাদন করতে পারবেন পেয়াঁজের বীজ। বর্তমানে নিজেদের উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়ে দেশের মোট চাহিদার শতকরা ৮৬.৩ ভাগ মিটলেও বাকি ঘাটতি মেটাতে পারে গ্রীষ্মকালীন বারি পেঁয়াজ-৫ জাত। কারণ শীতকালীন পেঁয়াজ শুধুমাত্র শীতকালে চাষ করা যায়, কিন্তু গ্রীষ্মকালীন এ পেঁয়াজ সারা বছরই চাষ করা সম্ভব।

কর্মসূচি পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নুর আলম চৌধুরী বলেন, 'এই প্রযুক্তিটা নিয়ে যদি পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করতে পারে তাহলে তারা দুইভাবে লাভবান হবে। এই পেঁয়াজ থেকে ৮০-৯০ শতাংশ বীজ পাবে আর যেগুলো থেকে বীজ হবে না সেখান থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনের পেঁয়াজ পাবে।'

এই বিজ্ঞানী জানালেন, এখন কৃষকের মাঠে এই পেয়াঁজ ছড়িয়ে দেয়ার কাজ করছেন তারা।

মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জুলফিকার হায়দার প্রধান বলেন, 'এই বছর আমরা প্রচুর পরিমাণে বারি-৫ পেঁয়াজের উৎপাদন করতে সক্ষম হবো এবং সেই বীজগুলো কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারবো। যার ফলে কৃষকের মাঠে বারি-৫ পেঁয়াজের ফলন আরও ভালো হবে।'

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ সম্প্রসারণে ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে দেশের ২৬টি জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে বিশেষ কর্মসূচি। এ কর্মসূচি শেষ হবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও বিস্তারের মাধ্যমে পেঁয়াজের ঘাটতি শুধু নয় একইসাথে বাৎসরিক ১১ হাজার টন পেয়াঁজ বীজের চাহিদাও অনেকটা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।

ইএ