চলতি বছর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে শেষ হচ্ছে বহুল কাঙ্ক্ষিত থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজ। অক্টোবরেই খুলে দেয়া হবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এই টার্মিনাল। তবে বিদেশি কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি না হওয়ায়, বিমানকে দিয়েই গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ শুরু করতে চায় বেবিচক।
গত বছরের ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অ্যাভিয়েশন খাতে সম্ভাবনার তৃতীয় টার্মিনালের একাংশ উদ্বোধন করেন। সে সময় শেষ হয়েছিলো পরিকল্পনার ৯০ শতাংশ কাজ। কথা ছিলো ২০২৪ এর শেষ নাগাদ যাত্রীদের জন্য খুলে দেয়া হবে এই টার্মিনাল।
ইতোমধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের সুবিধা নিতে শুরু করেছে। অবতরণের পর দু'টি হাই স্পিড এক্সিট ট্যাক্সিওয়ে ব্যবহার করে উড়োজাহাজগুলো দ্রুতই রানওয়ে থেকে বের হয়ে যেতে পারছে। এছাড়া চলতি বছর এপ্রিলে এ্যাপ্রোন ও কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার শুরু করবে দেশের প্রধান এই বিমানবন্দর।
চুক্তি অনুযায়ী আগামী ৬ এপ্রিল শতভাগ কাজ শেষে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে তৃতীয় টার্মিনাল বুঝে নেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং জাপানকে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো চুক্তি হয়নি।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে জাপানের চুক্তি হতে জুলাই কিংবা আগস্টে চলে যাবে। এই চুক্তি হলে তারা টেকওভার করবে। কিন্তু তখন টেকওভার করে অক্টোবরে তাদেরকে দিয়ে চালানো অসম্ভব। সেজন্য আমার আগ্রহ হচ্ছে, আমরা কাজটা বুঝে নিয়ে চালু করে দেবো।’
অক্টোবরে অপারেশনে আসতে এখন পুরোদমে চলছে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অনুশীলনের কাজ। শিগগিরই পুরাতন থেকে নতুন টার্মিনালে স্থানান্তর করা হবে অবকাঠামো ও জনবল।
বেবিচক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘পুরনো টার্মিনাল থেকে নতুন টার্মিনালে যাওয়ার একটা প্রসেস আছে। এই প্রসেস আমরা চালু করে দিয়েছি। আশা করছি, চুক্তি অনুযায়ী আমরা আগামী ৬ এপ্রিল কাজ বুঝে নেবো।’
এদিকে দেশের সব বিমানবন্দরে এককভাবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব চায় সংস্থাটি। এজন্য ইতোমধ্যে ১০০০ কোটি টাকার সরঞ্জাম কিনেছে, বাড়াচ্ছে জনবল। যদিও তাদের বিরুদ্ধে আছে অব্যবস্থাপনা, নিম্নমানের সেবা ও যাত্রী হয়রানির অভিযোগ।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমডি শফিউল আজিম দাবি করেন, বর্তমান বিমানবন্দরে সুযোগ-সুবিধার অভাবেই সেবা দিতে পারেনি বিমান। বিশ্বমানের টার্মিনালে বিশ্বমানের সেবা দিতে প্রস্তুত তারা।
তবে অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং করতে পর্যাপ্ত সরঞ্জামের পাশাপাশি বিমানকে জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে। তা নাহলে ফের ইমেজ সংকটে পড়তে পারে দেশ।
অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ উইং কমান্ডার (অব.) এটিএম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা যদি সার্ভিস দিতে পারে দেবে। কিন্তু আগে যারা জিনিসপত্র আছাড় মেরে ফেলে দিয়েছে, তারা যদি একইভাবে এমনটি করে তাহলে আশা বা ভরসা করা যায় না।’
২২ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে নতুন ফ্লাইটের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো।