মিরপুর থেকে রাজধানীর দক্ষিণে মেট্রোতে করে প্রতিদিন যাতায়াত করে অনেক মানুষ। সকাল সন্ধ্যা মেট্রোতে চড়ার সুবিধা পাওয়ায় এই এলাকায় বছরের শুরুতেই বাড়ছে ভাড়াটিয়ার সংখ্যা।
স্থানীয়রা জানান, আগে যে বাসা পাওয়া যেতো ১১ থেকে ১২ হাজারে সেটিই এখন ভাড়া নিতে গুণতে হচ্ছে অন্তত ১৫ হাজার টাকা।
রাজধানীতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার বাসার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আর মধ্যবিত্ত শ্রেনি ১২'শ থেকে ১৫'শ স্কয়ার ফিটের এমন বাসা খুঁজতে সবসময়ই খেয়াল রাখেন কর্মস্থলের দূরত্ব এবং বাচ্চাদের স্কুলের যাতায়াত। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানী অজিমপুরের ভিকারুনন্নিসা নূন স্কুলের আশপাশের বাসা ভাড়া অনেক বেশি। ঠিক একই মাপের বাসা কিছুটা দূরত্বে নিলে সেই বাসার ভাড়া কমে আসে দুই থেকে তিন হাজার টাকায়। এই চিত্র সব এলাকাতেই দেখা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন এবং বেশকিছু স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজিমপুরের আশেপাশে থাকায় এই এলাকায় থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন অভিভাবকরা। এছাড়া অধিকাংশ ভাড়াটিয়া শিক্ষার্থী বা ব্যাচেলর হওয়ায় হুট করে বাড়তি ভাড়ার নোটিশে টানাপড়েনে পড়েন তারা।
মানিকনগর, বাসাবো এবং খিলগাঁওসহ বেশ কিছু এলাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের প্রাধান্য। অন্য এলাকাগুলোর তুলনায় বাসা ভাড়া কম-এই খবরে সবাই ভিড় করলেও বাস্তবতা ভিন্ন। এখানেও প্রতিবছরই নিয়ম করে বাসা ভাড়া বাড়ে। বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে যেখানে বাড়তি দামে নিত্যপণ্য কিনতে হচ্ছে, সেখানে বাড়তি বাড়িভাড়া নগরবাসীর যাপিত জীবনের উদ্বেগের রেখা বাড়িয়ে দিয়েছে।
আবাসন খরচ বেড়েছে বিত্তবানদের আবাসস্থল গুলশান বনানীতেও। এখানে থাকার খরচ তো বাড়ছেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে সার্ভিস চার্জের খড়গ। ভাড়াটিয়াদের দাবি, অযৌক্তিকভাবে বাড়ছে নানাবিধ খরচ। এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ আশা করছেন তারা।
তবে বাড়িওয়ালাদের দাবি, কিছুদিন পর পর গ্যাস বিদ্যুৎ পানির দাম বাড়ে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব খরচ বহন করেন ভাড়াটিয়ারা। তবুও বাড়তি ভাড়ার বোঝা কেনো চাপানো হয় ভাড়াটিয়াদের ঘাড়ে?
বাণিজ্যিক এলাকায় আবাসিক ভাড়ার দাপট আরও বেশি। নিম্নবিত্তের আশ্রয়স্থল বস্তিতেও স্বস্তি মেলে না।
ভাড়াটিয়া সংগঠনের নেতারা মনে করেন- নিয়ন্ত্রণে কোন কার্যকরী আইন না থাকায় ভাড়া নিয়ে বাড়াবাড়ি হলেও কোনো প্রতিকার পান না ভুক্তভোগীরা।
ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি বাহারানে সুলতান জানান, বাড়িওয়ালারা ভাড়া বাড়ানের ব্যাপারে কোন আইন-কানুন নিয়মনীতি কোন কিছুই তারা মানছেন না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের এপ্রিল-জুনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাড়িভাড়া ৫.৯৩ শতাংশ বেড়েছে । সিটি করপোরেশন বলছে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণে অঞ্চলভিত্তিক ম্যাপিং এবং পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে জরিপ নিয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ চলছে, সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করে দায়িত্ব দিলেই এটি কার্যকর করতে মাঠে নামবে তারা।