দেশে এখন , আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

সাতক্ষীরায় ৮০০ কোটি টাকার চিংড়ি রপ্তানি

বাগদার তুলনায় গলদা চিংড়ি উৎপাদনে ঝুঁকি কম, দামও ভালো। যে কারণে সাতক্ষীরায় বাড়ছে গলদা চাষ। গেল অর্থবছরে শুধু এই জেলা থেকেই প্রায় ৮০০ কোটি টাকার চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে।

বিশ্ববাজারে চাহিদা থাকায় নব্বইয়ের দশকে সাতক্ষীরায় ফসলের জমিতে লবনপানি তুলে বাণিজ্যিকভাবে বাগদা চিংড়ির চাষ শুরু হয়। শুরুর দিকে এই খাত থেকে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আসলেও গেলো দশকে পরিবেশ বির্পযয় ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা কারণে কমতে থাকে এর পরিধি।

কোভিড পরবর্তী সময়ে বিশ্ববাজারে বাগদা চিংড়ির চাহিদা কমে যায়। তবে চলতি অর্থবছরে ফের গলদা চিংড়ি রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।

মূলত বাগদা চাষে ভাইরাস সংক্রামণের ঝুঁকি বেশি। এজন্য গলদা চিংড়ি চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। একই সঙ্গে বিশ্ববাজারেও গলদার প্রচুর চাহিদা। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে এ মৌসুমে জেলার ২০ হাজার হেক্টর জমির ঘেরে গলদা চিংড়ি চাষ হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় ২ হাজার হেক্টর বেশি।

গলদা চাষিরা বলেন, '৪০ হাজার মাছ ছাইড়া ১৫ মণের মতো মাছ পাওয়া গেছে। ঘেরে আরও মাছ আছে। অন্যান্য বারের চাইতে মাছটা এবার ভালো হইসে। ব্যবসাও ভালো হইসে আমাদের।'

তবে গলদা চিংড়ি উৎপাদনে রেণু পোনার সংকটের দাবি চাষিদের। যেকারণে অনেকের আগ্রহ থাকলেও চাষ করতে পারছেন না। সরকারিভাবে প্রাকৃতিক উৎস থেকে গলদার পোনা আহরণ নিষিদ্ধ। হ্যাচারিগুলোতেও সামান্য পোনা উৎপাদন হয়। যা চাহিদার তুলনায় খুবই কম।

চাষিরা আরও বলেন, 'গলদার ব্যবসা বাড়সে কিন্তু এর রেণু পাওয়া যায় না। সময় মতো পানি পাওয়া যায় না, পোনা মিলে না। যদি মাছের পোনা উৎপাদন করে পানির সাথে মিশ করে ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে লাভটা ভালো হয়।'

বাংলাদেশ চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বাবলা বলেন, 'এই অঞ্চলে দুইটি হ্যাচারির উপর নির্ভর করতে হয় পানির কারণে। পানির মান ভালো না। যদি উন্নতি প্রযুক্তি করা যায় এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা গেলেও মানুষ উদ্বুদ্ধ হবে। পরিবেশ ও আবহাওয়ার কারণে।'

মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জেলার প্রায় ৬৫ হাজার মাছের ঘেরসহ নিচু এলাকার ফসলি জমিতে সমন্বিত চাষাবাদ বাড়ছে। এসব খামারের প্রায় ৯০ শতাংশই চাষ হচ্ছে গলদা। তবে পর্যাপ্ত হ্যাচারি না থাকায় সঠিক সময় চাহিদা অনুযায়ী পোনা সরবারহ করা যাচ্ছে না।