যুদ্ধ-সংঘাত, মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন, মূল্যস্ফীতি আর অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বিশ্বে চরম আকারে বাড়ছে ধনী-দরিদ্র বৈষম্য। ২০২০ সাল থেকে ৪ বছরে বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের ঝুলিতে যোগ হয়েছে ৩ লাখ কোটি ডলারের বেশি। লন্ডনভিত্তিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান অক্সফাম বলছে, শীর্ষ ৫ ধনী ব্যক্তির সম্পদ ৪০ হাজার কোটি ডলার থেকে ৮৬ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
অথচ একই সময়ে দরিদ্র হয়েছেন বিশ্বের ৬০ শতাংশ মানুষ। বিলিওনিয়াররা বিশ্বের বৃহত্তম ১০ কোম্পানির মধ্যে ৭টি পরিচালনা করছেন।
এই সময় দ্বিগুণ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন বার্নার্ড আর্নল্ট, জেফ বেজস, ওয়ারেন বাফেট, ল্যারি ইলিসন ও ইলন মাস্ক। অক্সফাম বলছে, মহামারি, মূল্যস্ফীতি আর যুদ্ধ বিলিওনিয়ারদের কপাল খুলেছে। তারা যদি এক মিলিয়ন ডলার প্রতিদিন খরচ করে, এরপরও ৪৭৬ বছর লাগবে পুরো সম্পদ শেষ করতে। এই অবস্থা চলতে থাকলে এক দশকের মধ্যে বিশ্ব পেয়ে যাবে প্রথম ট্রিলিওনিয়ার। কিন্তু দারিদ্র বিমোচন হবে না আগামী ২৩০ বছরেও।
কিন্তু এই অসমতা কোন দুর্ঘটনা নয়। বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান আর মনোপলি পাওয়ারই মূলত অসমতার মেশিন হিসেবে কাজ করছে। কর্মীদের চাপ দিয়ে, করের বোঝা বাড়িয়ে, সরকারি প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণ করে, জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রেখে তৈরি হচ্ছে এই অসমতা।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে প্রকাশিত অক্সফামের বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, গেলো এক দশকে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কর দেয়ার পরিমাণ আশঙ্কাজনকহারে কমেছে। সেক্ষেত্রে সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে অর্থ ব্যয় করতে ব্যর্থ হচ্ছে। চার বছরে মূল্যস্ফীতির কাছে হার মেনেছে ৭৯ কোটি কর্মী।
অক্সফাম বলছে, বিভিন্ন দেশের সরকারকে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীর বেতনে লাগাম টানার পাশাপাশি একচেটিয়া আধিপত্য কমিয়ে তাদের ওপর সম্পত্তির হিসেবে কর নির্ধারণ করা উচিত। যেন প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ কোটি ডলার কর বাবদ উঠে আসে।
বাজার ব্যবস্থা সুষ্ঠু আর বিলিওনিয়ারদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে আনার পাশাপাশি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মোটা অঙ্কের মুনাফার ওপর কর আরোপের পরামর্শ দিচ্ছে অক্সফাম।