অনিয়মের খোঁজ পেয়ে বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে অভিযানে যায় দুদকের একটি দল। এসময় দেখা যায়, লগবইয়ে রোগীদের সরকারি ওষুধ ও সরঞ্জাম সরবরাহের কথা লেখা থাকলেও, বাস্তবে তা পাননি চিকিৎসাধীন রোগীরা। দুদক টিমকে পেয়ে রোগী ও তাদের স্বজনরা অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে হাতেনাতে অনিয়মের প্রমাণ পায় দুদক কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে প্রতিদিন রোগীদের জন্য ২৫০ ধরনের ওষুধ বরাদ্দ থাকে। এরমধ্যে জ্বরের ওষুধ থেকে শুরু করে অ্যান্টিবায়োটিকও আছে। যেমন সেফট্রাইএক্সন। এ ওষুধের সরকার নির্ধারিত দাম ১১৭টাকা। এ হাসপাতালে বছরে সাড়ে তিন লাখের মতো প্রয়োজন হয় এ ওষুধের। এরজন্য বরাদ্দ থাকে তিন থেকে চার কোটি টাকা।
আলবুটেইন নামে এক ওষুধ। যা প্রোটিন কমে গেলে রোগীকে দিতে হয়। এক ভায়ালের দাম ৮ হাজার কোটি টাকা। বছরে যা ৪০০ ভায়ালের মতো লাগে। সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে বছরে ওষুধ লাগে ১৭ কোটি টাকার।
অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তারা জানান, সরকারি ওষুধ বাইরে বিক্রি করে দেয় নার্স ও কর্মচারিদের একটি চক্র। অভিযানে সে প্রমাণ হাতেনাতে মিলেছে।
চট্টগ্রাম দুদক -১ এর সহকারি পরিচালক এনামুল হক বলেন, 'রেজিস্ট্রার লিস্ট অনুযায়ী ওষুধগুলো বিভিন্ন বেডে ও রোগীদের দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা বেডে গিয়ে দেখি তাদের এ ওষুধ দেয়া হয়নি। প্রেসক্রিপশনে ও রোগীর কাছে ওষুধ নেই এমন প্রশ্ন করা হলেও তারা জবাব দিতে পারেনি।'
পরে দুদক কর্মকর্তারা মেডিকেলের পরিচালকের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন। এসময় দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পরিচালককে নির্দেশ দেন তারা।
চমেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনোরেল মো. শামিম আহসান বলেন, 'অপরাধে নিজেদের লিপ্ত করে গুটি কয়েকজন। প্রমাণসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করা হবে।'
এর আগেও একাধিকবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরকারি ওষুধ বাইরে বিক্রির প্রমাণ পায় দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।