গাজীপুরের বনখড়িয়া এলাকায় দুর্বৃত্তরা গ্যাসকাটার দিয়ে রেললাইনের পাত কেটে ফেলায় বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোরে লাইনচ্যুত হয় 'মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের' ইঞ্জিনসহ ৭টি বগি। দুর্ঘটনার পর দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করে রেলওয়ে উদ্ধারকারী দল।
প্রায় ১৬ ঘন্টা পর বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সচল হয় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ। তবে ট্রেন চলাচল শুরু হয় প্রায় ২৬ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা থেকে।
সকাল ৬টায় প্রথমে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ময়মনসিংহগামী বলাকা কমিউটার ট্রেন মেরামত করা রেলপথ দিয়ে নিরাপদে পার হয়। এরপর একে একে জামালপুর কমিউটার, তিস্তা ও মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেন নিরাপদে এই রেলপথ পাড়ি দেয়।
লাইনচ্যুত সাতটি বগির মধ্যে দুইটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও রেললাইনের পাশে পড়ে আছে ইঞ্জিনসহ ৫টি বগি। সকাল থেকে রেলপথের ভাঙ্গা স্লিপার মেরামত ও বগি উদ্ধারে কাজ শুরু করে রেলওয়ের শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রফিকুল ইসলাম। এসময় নাশকতাকারীদের খুঁজে বের করতে আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও গ্যাসকাটার সিলিন্ডারের উৎস অনুসন্ধানে যৌথ অভিযান চালায় বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা।
গাজীপুর ৬৩ ব্যাটালিয়ন বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, 'এখানে বাইরে থেকে এসে কেউ নাশকতা করার সাহস পাবে না। আশেপাশের গ্রামের মানুষের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এক বা দুইটি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে লাইন কাটা হয়েছে। আমরা খোঁজার চেষ্টা করছি এ সিলিন্ডার কোথা থেকে এসেছে।'
এর আগে, দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি অনুসন্ধানে পৃথক ৩টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সকাল ১০টার পর দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা জানান কমিটির প্রধান।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শাহ ইমাম আলি রেজা জানান, 'প্রয়োজনীয় নথিগুলো দেখার পর এর সাথে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবো। এরপর কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেব।'
দুর্ঘটনায় রেলের বগি-ইঞ্জিনসহ ৬০০ ফুট রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১০০টি স্লিপার ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় নতুন করে বসানো হয়েছে। ৩০০ ফুট রেললাইনে নতুন করে বসানো হয়েছে পাত।