দেশে এখন
0

৩৪ জেলায় নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ

চলতি বছর সাত জেলায় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ১৪ জনের মধ্যে ১০ জনই মারা গেছেন। আর ২০০১ থেকে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩৩৯ জন। যার মধ্যে ২৪০ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বিবেচনায় নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুহার শতকরা ৭১ শতাংশ।

সকালের মিষ্টি রোদে খেজুর রসে রসনা মিটলেও শঙ্কা আছে প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হবার। গবেষণা বলছে, দেশে খেজুরের রসের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়ছে নিপাহ ভাইরাস।

টাটকা খেজুর রসের স্বাদ নেয়ার লোভ সামলাতে পারেন না অনেকেই। কিন্তু নিপাহ ভাইরাসের কারণে এই সুমিষ্ট তরল যে এখন জীবনঘাতি। উৎপাদনে নিয়োজিত থাকলেও বিষয়টি জানেন না অনেক গাছি। ভীতিকর ও ক্ষতিকর খবরটি জানা নেই ভোক্তাদেরও।

রস বিক্রেতা আব্দুস সালাম এখন টিভিকে বলেন, 'আমি ২৬ বছর যাবত এই পেশায় জড়িত। কীভাবে এই ভাইরাস ছাড়িয়ে রস নামাবো তা আমাকে জানালে উপকৃত হবো।'

ভোক্তারা জানান, 'খেজুর রস বিশুদ্ধ করে খাওয়ার নিয়ম আমরা জানি না। এই প্রাকৃতিক জিনিসেও যে জীবাণু থাকতে পারে তা অজানা ছিল। শিক্ষক কিংবা অভিভাবকরাও কখনো বলেনি।'

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বলছে, খেজুরের কাচা রস থেকে মানুষের শরীরে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ হয়।

সদর উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু বলেন, 'কাঁচা রস খাওয়া উচিত নয়। অবশ্যই ফুটিয়ে খেতে হবে। এক্ষেত্রে সাবধান হতেই হবে নয়তো ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হবো।'

প্রথম দিকে দেশের উত্তরাঞ্চলে অতিঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে এই ভাইরাসের সংক্রমণ। এখন মধ্যাঞ্চলেও সংক্রমণ ঘটছে। রোগতত্ত্ববিদরা বলছেন, সংক্রমণ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে। এ নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতেও কাজ চলছে।

বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শফিউল আজম বলেন, 'রস এখন না খাওয়াই উত্তম। স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো থেকে লিফলেট আসলে বিতরণ করবো।'

আইইডিসিআরের তথ্যমতে, ২০০১ সালে দেশে প্রথমবারের মতো মেহেরপুর জেলায় নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। এর প্রাকৃতিক বাহক মূলত ফলখেকো বাদুড়। আর এ পর্যন্ত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে ৩৪টি জেলায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো প্রতিরোধী টিকা আবিষ্কার না হওয়ায় প্রতিরোধ ছাড়া এই ভাইরাস থেকে বাঁচার তেমন সুযোগ নেই।