বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ। দু-দেশের পাল্টাপাল্টি হামলায় উর্ধ্বগতিতে হতাহতের সংখ্যা। এবার যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর নতুন করে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা।
প্রতিদিনই শত শত ফিলিস্তিনি নিহতের খবর আসছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় মারা গেছে ৭০০ জন। গাজার বর্তমান অবস্থা ভয়াবহ। হামাস ও ইসরাইল দুই পক্ষের হাতেই এখনো অনেক মানুষ বন্দি।
সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে হামাস ১০৫ জিম্মিকে মুক্তি দেয়। বিনিময়ে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় ইসরাইল। তবে বাকিদের ফেরা এখন প্রায় অনিশ্চিত। ইসরাইলের হামলা বন্ধ না হলে, কোন আলোচনায় না যাবার কথা বলছে হামাস। অন্যদিকে হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত থামবে না ইসরাইল।
এদিকে, জিম্মিদশা থেকে পরিবারের কাছে ফিরলেও তাদের শঙ্কা কাটেনি। অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না। মৃত্যুভয়ে দিন কাটছে তাদের। কারাগারে অমানুষিক নির্যাতনের কথা ভুলতে পারছে না তারা।
জিম্মি অবস্থায় এক অনিশ্চিত জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে। গণমাধ্যমকে তারা জানান, 'কারাগারের ভেতরের অবস্থা স্বাভাবিক ছিল না। ভৌতিক জীবন ছিল। সত্যি বলতে বন্দি অবস্থায় সারাক্ষণ মারধর, নিপীড়ন ও নির্যাতনের ভয় ছিল। জীবিত অবস্থায় ফেরার আশা ছিল না।'
একজন ফিলিস্তিনি মাকে তার ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুশিতে বার বার জ্ঞান হারাতে দেখা যায়। যেন তার বিশ্বাসই হচ্ছে না তার ছেলে ফিরে এসেছে।
ইসরাইল দাবি করছে, জিম্মিদের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে হামাস। তাদেরকে মারধর করে অনাহারে রেখেছে। যদিও মুক্তি পেয়ে হাসিমুখে বের হয় বন্দিরা। অনেকে হামাস সদস্যদের সঙ্গে হাত মেলান। হাত নেড়ে তাদের বিদায়ও জানায়।
মেয়েসহ মুক্তি পেয়ে এক ইসরাইলি মা হামাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে আবেগঘন চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি লেখেন, গাজায় বন্দি অবস্থায় তার মেয়ে রানীর মতো ছিল। হামাস যোদ্ধারা তাদের সঙ্গে খুবই ভালো ব্যবহার করেছে।
এদিকে, হামাসের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানান থাইল্যান্ডের নাগরিকরা। দীর্ঘ ৫০ দিন পর স্বজনদের দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি তারা।
যুদ্ধ বন্ধ ও বন্দিদের মুক্তির দাবিতে বিশ্বের নানা প্রান্তে আন্দোলন বিক্ষোভ হচ্ছে। তেল আবিব শহরে বন্দিদের মুক্তির জন্য বিশাল শোভাযাত্রা ও প্রতিবাদ করেছে স্বজন ও সাধারণ মানুষ। সবার দাবি যুদ্ধ বন্ধ করা ও জিম্মিদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা।