ময়মনসিংহ নগরীতে অস্তিত্ব সংকটে পুরোনো দর্জির দোকানগুলো। একসময় জমজমাট ব্যবসা করলেও এখন হারিয়েছে জৌলুস। বিনিয়োগ ও সময়ের সাথে তাল মেলাতে না পেরে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। যদিও মোটা অংকের বিনিয়োগ এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে ভালো ব্যবসা করছে অনেক নতুন টেইলার্স।
ময়মনসিংহ শহরের শিববাড়ি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল খালেক। স্বাধীনতা পরবর্তী পোশাক তৈরীর নামকরা প্রতিষ্ঠান দি পিপুলস টেইলার্সের মালিক। মাত্র ১০ বছর বয়সে সেলাইয়ের কাজে হাতেখড়ি হয় তার। বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ আশপাশের জেলা থেকেও লোকজন আসতো তার কাছে পোশাক তৈরি করতে। দোকানটি আগের মত থাকলেও এখন আর নেই কাস্টমারের ভিড়।
এই যেমন গাঙিনারপাড় এলাকার আরও একটি নামকরা টেইলার্স স্টাইলো। কোনোরকমে টিকে আছে পুরোনো ঐতিহ্যের স্মারক হয়ে। বিনোয়োগ বাড়িয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে বস টেইলার্সও। যদিও স্কুল-কলেজের ড্রেসের ওপরই টিকে আছে বেশিরভাগ দর্জির দোকান। দর্জিরা বলছেন প্রতিযোগিতামূলক মার্কেটে ব্যবসা ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে না পারা ও রেডিমেড পোশাকের দাপটে কাজ হারিয়েছে তারা। এদিকে দর্জির দোকানে কাজ কমে যাওয়ায় সংকটে সেলাই শ্রমিকরা। ডিজিটাল যুগে এসেও সামর্থের অভাবে এখনো অনেকে পায়ে চালিত সেলাই মেশিনে দিয়ে করছেন কাজ।
তবে, নতুন নতুন অনেক টেইলার্স এখন বেশ জমজমাট। সেটি ব্যবসা, ফ্যাশন কিংবা নান্দনিকতায়। মোটা অংকের বিনিয়োগও হচ্ছে এই ব্যবসায়। ঢাকা থেকে আসা নামীদামী ব্র্যান্ডের টেইলার্সের সাথে পাল্লা দিয়ে স্থানীয় টেইলার্সগুলোও জানান দিচ্ছে নিজেদের সক্ষমতার।
প্রায় আড়াইশো বছরের পুরোনো শহর ময়মনসিংহে প্রাতিষ্ঠানিক দর্জির দোকান কবে থেকে শুরু হয় তার কোন সঠিক ধারণা নেই। তবে জমিদারদের এই অঞ্চলে আগমনের পর থেকে দর্জির কাজ শুরু হয় বলে ধারণা পাওয়া যায়।
