যমুনার চরে ফসল আবাদে ভাগ্য ফিরেছে কৃষকের

এখন জনপদে , শস্য
কৃষি
0

যমুনার বালুময় চর এখন ভরে উঠেছে ফুলে ফসলে। এর উপর ভর করে বদলে যাচ্ছে চরাঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা। তবে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্যদাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। বাজারজাত নিশ্চিত করার পাশাপাশি চরে উচ্চ ফলনশীল ফসল চাষাবাদে আগ্রহ বাড়াতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

সবুজের চাদরে ঢেকে গেছে যমুনার বুকে জেগে উঠা দুর্গম মেছরার চর। মরিচ তুলতে ব্যস্ত কৃষান-কৃষাণীরা। চরে উৎপাদিত মরিচ আকারে পরিপুষ্ট ও রং ভালো হওয়ায় চাহিদাও বেশ।

চলতি মৌসুমে জেলার চরাঞ্চলে এক হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। বিঘায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ফলন পেয়েছেন ১০ থেকে ১২ মণ শুকনো মরিচ। প্রতি মণ শুকনো মরিচ বিক্রি করছেন আট থেকে নয় হাজার টাকায়। এতে বিঘায় লাভ হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।

জেলার নদী তীরবর্তী পাঁচ উপজেলার চরাঞ্চলের পতিত জমিতে এখন বছর জুড়ে চাষাবাদ হচ্ছে ধান, ভুট্টা, গম, সরিষা, মরিচ, বাদাম, টমেটো ও মাস কালাইসহ নানা ফসল। উৎপাদন খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি ফলনও হচ্ছে ভালো।

চরের কৃষকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এই অঞ্চলে তো বানের পানি আসেনা, ফলে জমিগুলো পরিষ্কার থাকে। সার কম লাগে।’

চাষিদের অভিযোগ, চরাঞ্চলের অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ব্যাহত হচ্ছে বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া। এতে মিলছে না ন্যায্যদাম। এ অবস্থায় ঋণ সুবিধার কথা বলছেন কৃষকরা।

কৃষকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘যে শস্য উৎপাদন করি তা সংরক্ষণ করার কোনো ব্যবস্থা নেই।’

আরেকজন বলেন, ‘আমাদের রাস্তাঘাট ও যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে আমরা আশানুরূপ লাভ করতে পারি না।’

কৃষি বিভাগ বলছে, চরাঞ্চলে উচ্চ ফলনশীল ফসলের চাষে আগ্রহ বাড়তে কৃষকদের দেয়া হচ্ছে পরামর্শ ।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি সম্পর্কে আমাদের কৃষক ভাইদের সম্যক ধারনা দেয়ার জন্য। এর বাইরেও সারাবছর আমরা বিভিন্ন ফসল প্রোনোদনা দিয়ে থাকি।’

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ জ ম আহসান শহীদ সরকার বলেন, ‘পরিবহণ এবং বাজারজাতকরণ বিষয়ে আমরা কৃষি বিভাগ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় তাদের পণ্যগুলো জমা করে আড়তে দেয়ার ব্যবস্থা করি।’

যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলের পতিত জমিতে এমন বৈচিত্র্যময় ফসল ফলিয়ে নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘুরাচ্ছে কৃষকরা। তারা বলছেন, কৃষি প্রণোদনার সাথে উৎপাদিত ফসলের বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করা গেলে এসব চরই হয়ে উঠবে দেশের অন্যতম শস্য ভাণ্ডার।

এসএইচ