কৃষি
0

জুমের পাকা ধানে সবুজ পাহাড়ে সোনালি রঙের আভা

পার্বত্য অঞ্চলের সবুজ পাহাড় জুমের পাকা ধানে এখন ধারণ করেছে সোনালি রঙ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় এবং আবহাওয়া ভাল থাকায় ফলনও হয়েছে ভাল। পাহাড়ি পল্লীগুলোতে চলছে এখন জুম কাটার উৎসব। কিশোর-কিশোরী যুবক-যুবতীসহ পরিবারের সবাই জুমের পাকা ধান কাটতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী পাহাড়িদের আদি পেশা জুম চাষ। দুর্গম পাহাড়ের অধিকাংশ বাসিন্দা জুম চাষের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদম উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে জুমে ধান চাষ করা হয়। প্রতিবছর এপ্রিল মাসে জমি প্রস্তুত করে লাগানো হয় নিড়িখা, উফশি, পিডি, ককরো, বিন্নি, গেলং এবং কানভূই ধানের বীজ। চার মাস পরিচর্যার পর সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হয় জুমের ধান কাটা উৎসব। যা চলে অক্টোবর মাস পর্যন্ত।

জুম ধানের মাধ্যমে জুমিয়া পরিবারগুলো সংগ্রহ করে রাখে তাদের সারা বছরের খোরাকি। তাই ফসল ভাল হলে পেটপুরে খেয়ে বছরটা পার করতে পারে পাহাড়ি এই পরিবারগুলো। আর ফলন ভাল না হলে বছরের শেষে কষ্টে দিন পার করতে হয় তাদের। তবে এবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যা না হওয়ায় এবং আবহাওয়া ভাল থাকায় সবুজ পাহাড় ভরে গেছে সোনালি পাকা ধানে। পাহাড়ি পল্লীগুলোতে এখন চলছে জুমের ধানকাটার মহোৎসব। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি জুমিয়া পরিবারগুলো।

জুমিয়া পরিবারগুলো জানায়, 'গতবছরের চেয়ে এ বছর ফলন ভালো হয়েছে'।

পার্বত্য অঞ্চল হওয়ায় সব জায়গায় সমান ভাবে বৃষ্টিপাত হয় না বলে উৎপাদনে তারতম্য হয় এবং একেক জায়গার ফলন একেক রকম হয়ে থাকে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। তবে এবার ফলন ভাল হওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলছেন এই কর্মকর্তা।

বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. হাসান আলী জানান, 'এবছর জুম কর্তন শুরু হয়েছে। অন্যান্য উপজেলায়ও জুম কর্তন শুরু হয়েছে। আশা করি এবছর আমরা ভালো পরিমাণে জুম ফসল তুলতে পারবো'।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, গত বছর জেলায় ৮ হাজার ৫শ' ৪০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়। আর চলতি বছর আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৪শ' ৬০ হেক্টর জমিতে।