ফুলের জন্য বিখ্যাত দক্ষিণাঞ্চলের জেলা যশোরের পরিচিতি বাড়ছে আমের জন্যও। প্রতিবছর এ জেলায় ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগরসহ উৎপাদন হয় প্রায় দেড়শো জাতের আম।
এরই মধ্যে জেলার আম গাছগুলোয় আসতে শুরু করেছে মুকুল। রোগবালাই থেকে আমগাছ মুক্ত রাখতে কীটনাশক স্প্রেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
চাষিরা বলেন, 'যেদিন কুয়াশা থাকে ওইদিন আমরা পানি স্প্রে করি। কুয়াশা না থাকলে যে কীটনাশক ব্যবহার করার দরকার সেটাই গাছে দেয়া হয়।'
আরেকজন বলেন, 'আমাদের মুকুলের ওপর নির্ভর করে স্প্রে করতে হয়। পোকা দেখে স্প্রে করতে হয়।'
আরেকজন চাষি বলেন, 'আম বাগানে এখন আমরা নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করছি। গাছের গোঁড়ায় পানিও দিতে হচ্ছে।'
যশোরের অধিকাংশ আম চাষি জানান, গত বছরে ঘন কুয়াশার কারণে আমের ফলনে বিপর্যয় হয়। তবে এ বছর কুয়াশা কম হওয়ায় আমের মুকুলের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তাই বাম্পার ফলনের ব্যাপারে আশাবাদী তারা।
এ বছর মুকুল খুবই ভালো এসেছে, আশা করা হচ্ছে গতবছরের তুলনায় এবার আমের ফলন অনেক ভালো হবে বলে মনে করছেন সেখানকার কৃষি সংশ্লিষ্টরা।
আম গাছ রোগবালাই মুক্ত রাখতে বাগান মালিকদের ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক প্রয়োগে নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানান কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রাশেদুল আলম বলেন, 'আমের যে হপার পোকা এটা মূলত পাতা ও কুড়ি থেকে রস খায়। এই রস যাতে না খেতে পারে সেজন্য নিয়মিত স্প্রে করা প্রয়োজন। আমাদের কিছু ছত্রাকনাশক আছে, কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের এগুলা স্প্রে করলে প্রতিকার পাওয়া যাবে।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, যশোর জেলা থেকে গত বছর ৪৪ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। এ বছর রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ১০০ টন।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক প্রতাপ মণ্ডল বলেন, 'কৃষক তার কাঙ্ক্ষিত দাম পাবেন এবং গতবছর যেহেতু ইউরোপের বিভিন্ন মার্কেটে আম রপ্তানি করেছি, আশা করা হচ্ছে এবারও আমাদের কৃষক লাভবান হবে।'
যশোরে এ বছর ৪ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা থেকে ৬৬ হাজার টন আম উৎপাদন হবে। উৎপাদিত আম বিক্রি করে আড়াইশ' কোটি টাকা আয় হবে বলে আশাবাদী কৃষি বিভাগ।