অর্থনীতি
কৃষি
0

সমন্বিত পদ্ধতিতে বোরো চাষে ব্যয় সাশ্রয়ের আশা

মাগুরায় চলতি বোরো মৌসুমে সমন্বিত পদ্ধতিতে ধান চাষ করে অন্তত শতকোটি টাকা ব্যয় সাশ্রয়ের আশা করছেন কৃষকরা। উন্নত বীজ, সময়মতো সার ও প্রশিক্ষণ পেয়ে উৎপাদন খরচ কমে এসেছে প্রায় ২০ ভাগ।

এ যেন সবুজের চাদর বিছিয়ে এক অনবদ্য শিল্পকর্ম ফুটে উঠেছে মাটির বুকে। ওপর থেকে দেখলে মনে হবে বিস্তীর্ণ মাঠে ছবি এঁকেছেন শিল্পী। সবুজ ধানের চারা নির্দিষ্ট দূরত্বে বেড়ে উঠছে সমলয়ে।

মাগুরার মোহাম্মদপুরের বিনোদপুর বাবুর মাঠে এমনিভাবেই যেন দোল খাচ্ছে হাজারো কৃষকের স্বপ্ন। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী, ১ মিটার চওড়া বেডের পর ১ ফুট করে ফাঁকা রেখে বিস্তীর্ণ মাঠে স্থাপন করা হয়েছে আদর্শ বীজতলা।

কৃষকরা বলেন, 'এক জায়গায় বীজ তৈরি করে একসঙ্গে মাঠে ধান রোপণ করি। পানি অপচয় কম হয়, বিদ্যুৎ বিল কম লাগে এবং লেবার খরচ কম হয়।'

নদী থেকে বারিড পাইপ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিএডিসির সেচ পাম্পের মাধ্যমে সাশ্রয়ী খরচে পানি এনে দুই শতাধিক কৃষকের জন্য প্রায় ৭ হেক্টর জায়গার এ বিশাল বীজতলা গড়ে তুলেছেন দু’জন প্রশিক্ষিত কৃষক।

তাদের একজন বলেন, 'নদীর পানি এনে বীজতলা করেছি। ১৫০ জনের বীজতলা আমরা দুইজনে দেখা শোনা করি।'

আরেকজন বলেন, 'প্রতি শতকে আমরা ৩০-৪০ টাকায় বীজতলা করতে পারি। বীজতলা ভালো হয়।'

একই সময়ে বীজতলা স্থাপন ও ধানের চারা রোপণের ফলে কৃষকদের ধান চাষ, রক্ষণাবেক্ষণ ও আধুনিক হারভেস্টারের মাধ্যমে ফসল কাটার সুবিধায় উৎপাদন খরচ অন্তত ১৫-২০ ভাগ কমে আসছে।

কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, ১৫০ জন কৃষককে ব্রি ধান-৮৯, ৯২ এবং বঙ্গবন্ধু-১০০ ধানের বীজ দেয়া হয়েছে। এখান থেকে যাতে কৃষক উপকৃত হয়।

আদর্শ বীজতলা ও সমলয়ের ধান রোপণ কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারলে এ জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে উৎপাদন হবে ৭২০ কোটি টাকা মূল্যের ২ লাখ ৫০ হাজার টন ধান। আধুনিক এ পদ্ধতি ব্যবহার করে খরচ বাঁচিয়ে যেখানে কৃষক অন্তত একশ কোটি টাকার অধিক লাভবান হবেন বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।

মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুস সোবাহান বলেন, ‘বেশিরভাগ বীজই আমাদের প্রণোদনার আওতায় দেওয়া।  আদর্শ বীজতলা করলে চারাগুলো সুস্থ সবল হয়। গুচ্ছ আকারে বীজতলা করলে কৃষকের পরিচর্যা খরচ কমে আসে এবং তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়।'

কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, মাগুরায় চলতি বছর ৩৯ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের ব্রী ধান-৭৪, ৮১, ৮৯, ৯২, বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ ও বিনা ধান ২৫সহ বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হচ্ছে।

ইএ