যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার শোয়েব আক্তার। ২০০৮ সালে বনবিভাগের চাকরি ছেড়ে বাড়িতে গড়ে তোলেন নার্সারি। পরে ২০২৩ সালে নড়াইলে স্বপন কুন্ডুর সাথে মিলে আড়াই একর জমিতে শুরু করেন বিভিন্ন ধরনের বরই চাষ। গেল ৯ মাসে প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ করে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।
স্বপন কুন্ডু বলেন, ‘চাকরিতে যে টাকা পেতাম তার থেকে এখানে বেশি। বরই চাষ খুব লাভজনক, তাই এই খাতে আসা।’
নড়াইলের ধান, পাট, গমসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হলেও বরই আবাদ অনেকটা নতুন। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার জেলায় আপেল, থাই আপেল ও বল সুন্দরিসহ বিভিন্ন প্রকার উন্নত মানের বরই চাষ করছেন অন্তত দুই হাজার কৃষক। যেখানে কাজের সুযোগ হয়েছে আরও অনেকের।
এলাকাবাসী বলেন, ‘সম্পূর্ণ বিষমুক্ত এই বরই বাগান। যার জন্য বাজারে চাহিদাও অনেক বেশি।’
বাগানের এক কর্মচারী বলেন, ‘মাসে ১৮ হাজার টাকা বেতন পাই। এই টাকা পেয়ে খুশি আমরা।’
আগে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসলেও এখন নড়াইলে উৎপাদিত বিষমুক্ত ফলগুলো আশপাশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে মান ভেদে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১৫০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘এখানকার বরই ফরমালিনমুক্ত এবং প্রচন্ড মিষ্টি। গুণে-মানেও অনেক ভালো এই বরই।’
নড়াইল সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. রোকোনুজ্জামান বলেন, ‘ঝুঁকিবিহীন একটি চাষ। এখানে রোগ বালাইয়ের উপক্রম কম এবং চাষ পদ্ধতি খুবই সহজ। এ কারণে চাষিরা খুব সহজে এটা চাষ করতে পারে।’
লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের প্রচলিত জাত থেকে বেরিয়ে উন্নতমানের বরই আবাদের পরামর্শ দেন তিনি।
নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এই সহযোগিতা কৃষকদের আরও বেশি অনুপ্রাণিত করবে এবং সামনের দিকে আমাদের বরই বাগান চাষ সম্প্রসারণ হবে।’