যশোর শহরের চাঁচড়া চেক পোস্ট থেকে ঝিনাইদহ শহরের বাইপাস পর্যন্ত চার লেনের রাস্তার দৈর্ঘ্য সাড়ে ৪৮ কিলোমিটার। এই সড়ক ধরে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার মালবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহন বেনাপোল ও দর্শনা স্থলবন্দর ও মোংলা সমুদ্রবন্দরসহ দক্ষিণের জেলায় যাতায়াত করে। খুলনার সঙ্গে রাজশাহীর যোগাযোগের একমাত্র সড়কপথও এটি। অথচ বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে পুরো সড়ক।
সড়কটি অধিকাংশ অংশে উঠে গেছে পিচ ও বিটুমিন। তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। যাতে চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই যাত্রী ও চালকদের। এমনকি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্যে।
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সদস্য এস এম হুমায়ুন কবীর কবু বলেন, ‘সাতক্ষীরা, খুলনা, নড়াইল, মাগুরা, আমাদের উত্তরবঙ্গের সঙ্গে মূল সংযোগ রোড হচ্ছে যশোর-ঝিনাইদহ সড়ক। এটা দিয়ে আমরা কুষ্টিয়া হয়ে উত্তরবঙ্গের দিকে চলাচল করে থাকি।’
অথচ এই সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর অনুমোদন হয় একনেকে। এরপর কাজ শুরুর কথা ছিল ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে। তবে এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও নেই দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি।
সড়কটিকে ৪ লেনে উন্নীত করতে সড়কের দুই পাশের গাছগুলো সরিয়ে করা হচ্ছে সীমানা নির্ধারণ, নিয়োগ দেয়া হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তবে এখনও শুরু হয়নি সড়কের মূল কাজ। যে কাজ চলমান তাও চলছে কচ্ছপগতিতে।
যদিও সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে, ঠিকাদার নিয়োগ, সড়কের গাছ অপসারণ, সীমানা নির্ধারণসহ বিভিন্ন কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে তৈরি হয়েছে ধীরগতি। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক কে এম নকিবুল বারি বলেন, ‘ব্রিজের ক্ষেত্রে আমাদের পাইলিং কাজ এবং রোড ওয়ার্কের ক্ষেত্রে আমাদের হয়ত মাটির ঢালার কাজ শুরু হবে। এগুলো এখনো সাব স্ট্রাকচার আসলে মাটির নিচে আছে। তাই এগুলো ওইভাবে দৃশ্যমান নয়। আশা করছি আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে আমাদের দৃশ্যমান কাজ দেখা যাবে। এটাকে আমরা ফেজ ওয়ান বলটা, যা ২৬০ কিলোমিটারের রোড নেটওয়ার্কের অংশ। ’
যশোর-ঝিনাইদহ চার লেন সড়কের কাজ শেষ হওয়ার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ৩০ জুন। আর এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৪ হাজার ১শ' ৮৭ কোটি টাকা। যেখানে ৪৮ কিলোমিটার এই সড়কে থাকবে একটি উড়ালসড়ক, চারটি বড় সেতু, ৫৫টি কালভার্ট, ১০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি আন্ডারপাস ও অপটিক্যাল ফাইবার কেবল ডিজাইন।