শিক্ষাই একটি জাতিকে এগিয়ে নেয়। সেজন্য এ খাতে সরকারের বরাদ্দও থাকে বেশি। কিন্তু তারপরও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়ে যখন দাম বাড়ে শিক্ষা উপকরণের।
শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়ার প্রভাব পড়ে চাকরি প্রত্যাশী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের উপরও।
নরসিংদীতে এমন চাকরি প্রত্যাশী সংখ্যা প্রায় অর্ধ লক্ষ। এছাড়া জেলায় সবমিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অন্তত ৫ লাখ। বছর ঘুরে বই-খাতা এবং সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামের দাম বেড়েছে গড়ে ২০ শতাংশ। কয়েক বছরের ব্যবধানে এসব শিক্ষা উপকরণের দাম ৫০ থেকে ১শ' টাকা বেড়েছে দাবি শিক্ষার্থীদের। কিছু ক্ষেত্রে তা দ্বিগুণের বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন সংস্করণের নামে প্রতিবছর বাড়ানো হচ্ছে বইয়ের দাম। বাজারে আধিপত্য বিস্তার করতে বেশকিছু প্রকাশনা সংস্থা বেছে নিচ্ছে অনৈতিক কৌশল।
ওরাকল বিসিএস শাখা ব্যবস্থাপক আয়মান সাদিক রাজন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং নানাভাবে বিপথগামী হচ্ছে। এছাড়া পড়াশোনার প্রতি অনীহা তৈরি হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ার সংখ্যাটাও বেশি দেখা যাচ্ছে।’
নরসিংদী ইম্পেরিয়াল কলেজের পরিচালক মো. মহসিন শিকদার বলেন, ‘ভারতে যে বইয়ের মূল্য ১০০ টাকা সে বইয়ের মূল্য বাংলাদেশের ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। মূল্য বৃদ্ধির এই প্রবণতা আমাদের বই বিমুখতা বাড়াচ্ছে।’
ফি বছর প্রায় ২০ শতাংশ করে শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়ার যৌক্তিক কারণ ছাড়াও বেশকিছু অজানা কারণও রয়েছে বলে দাবি জেলা পুস্তক বিক্রয় সমিতির। এই অবস্থায় বাড়াতে হচ্ছে বিনিয়োগ, তাল মেলাতে হিমশিম অবস্থা পুস্তক ব্যবসায়ীদের।
নরসিংদী জেলা পুস্তক-প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি বছরই মূলধন বৃদ্ধি হচ্ছে, যার কারণে অনেকেই সময়ের সঙ্গে তাল মিলাতে পারছে না। এজন্য অনেকেই বই ব্যবসা ছেড়ে বিকল্প ব্যবসা বা প্রবাস জীবনে দিকে ঝুঁকছেন।’
শিক্ষা উপকরণে দাম বাড়লে বেড়ে যায় শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার সংখ্যা। সাথে শঙ্কা বাড়ে অপরাধ প্রবণতার। এমন বাস্তবতায় শিক্ষা উপকরণের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার দাবি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের।