কৃষি
এখন জনপদে
0

উত্তরাঞ্চলের কৃষিতে নতুন করে পথ দেখাচ্ছে কমলা ও মাল্টার চাষ

উত্তরাঞ্চলের কৃষিতে কমলা ও মাল্টার চাষ নতুন করে পথ দেখাচ্ছে। শীত প্রধান অঞ্চলের এসব বিদেশি ফল দেশের উত্তরাঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছে কমলা জাতীয় ফল চাষে। এতে বিদেশি ফলের আমদানি নির্ভরতা কমার সাথে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ী হবার কথা বলছেন বাগান সংশ্লিষ্টরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, সম্ভাবনাময় এ খাত নতুন করে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে তেমনি পাল্টে দিচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি।

উত্তরের জনপদে মঙ্গার দুঃখ, দারিদ্র্য আর ক্ষুধার অবসান ঘটিয়েছে সবুজ শস্য। করুণ অবহেলার সাক্ষী এ জনপদ কালক্রমে যেমন হয়েছে স্বনির্ভর, তেমনি পথ দেখাচ্ছে দেশের কৃষি অর্থনীতির।

সাম্প্রতিক বছরে দক্ষিণ চীন কিংবা উত্তরপূর্ব ভারতের কমলার আভা দ্যুতি ছড়াচ্ছে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে। কমলা বাগান ভেদ করা সকালের এ সূর্যের আলো জানান দিচ্ছে নতুন কৃষি বিপ্লবের।

জাম্বুরা ও কমলা গাছের শাখার সাহায্য নিয়ে তৈরি হয় কলম। স্বল্প পরিচর্যায় বছর দুয়েকের মধ্যেই কলম থেকে তৈরি হওয়া গাছে আসে ফল। পোকা, পচনরোধ কিংবা শীতের প্রকোপ থেকে ফল বাঁচাতে সাহায্য নেয়া হয় ব্যাগিং প্রক্রিয়ার।

বাগান মালিকরা বলছেন, কমলা ও মাল্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছে বিদেশি ফল চাষে। বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হওয়া এসব বাগান অল্পতেই দেখছে লাভের মুখ।

টাঙ্গন ব্যারেজকমলা ও মাল্টা বাগানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘যত গাছ বাড়ছে তত ফলন বাড়ছে। ২০২২ সালে বিক্রি করেছিলাম আড়াই লাখ টাকার ২০২৩ সালে বিক্রি করেছিলাম ৬ লাখ টাকার এবার আশা করছি ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার বিক্রি হতে পারে।’

মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমার ৬ বিঘা জমি মাত্র দুই লাখ টাকা খরচ করে ১০ থেকে ১৫ লাখ আয় করতে পারছি কিন্তু এই জমিতে ধান চাষে করলে আরো বেশি টাকার দরকার হতো এবং লাভও কম হতো।’

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এ অঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটি কমলাজাতীয় ফল চাষের উপযোগী হওয়ায় কৃষি খাত বাড়ার সাথে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান। বিদেশি ফল চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিচ্ছে অধিদপ্তর।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের চারা ও বীজ সরবরাহ করার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দিচ্ছি বড় বাজারে যেখানে যোগাযোগ করে দেয়া সম্ভব সেখানেও আমরা সংযুক্ত করে দেয়ার ব্যবস্থা করছি।’

কৃষি সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শুধু কমলা জাতীয় ফলই নয় বিদেশি বিভিন্ন ফল চাষের উদ্যোগ কৃষির নতুন দ্বার উন্মোচনের সাথে সাশ্রয় করবে বৈদেশিক মুদ্রা।

এএম