চুন্নু-আসলামরা যখন ফুটবল মাঠ দাপিয়ে বেড়াতেন, তখন সোশ্যাল মিডিয়া ছিল কল্পনাতীত। তবু লাল-সবুজের বাংলায় ফুটবলের জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। তখন আন্তর্জাতিক কিংবা ঘরোয়া ফুটবলে অর্জনের গল্প ফলাও করে প্রচার হতো পত্র-পত্রিকায়। ঠাঁই পেত ফুটবলারদের ব্যক্তিগত অর্জনও।
অথচ ফুটবলের এসব অর্জনের স্মারক সংরক্ষণ করেনি বাফুফে। বড় উদাহরণ ২০০৩ সালের ঐতিহাসিক সাফ ট্রফি। দেশের ফুটবলের অন্যতম সেরা অর্জনের এই ট্রফির কোনো খোঁজ নেই।
শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠার ৫২ বছর হলেও দেশের ফুটবলের সোনালি স্মৃতি সংরক্ষণ করতে কোনো আর্কাইভ স্থাপন করেনি বাফুফে। ফলে ফুটবলের সুদিনের স্মৃতি হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম।
কিংবদন্তি সাবেক ফুটবলাররা মনে করেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ফুটবলের অর্জনগুলোকে আর্কাইভ করা জরুরি।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু বলেন, ‘এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। স্বাধীনতার পর থেকে উদ্যোগ নেয়নি আর্কাইভ করার। যে কারণে আমাদের ফুটবলের অনেক কিছু ইতিহাস থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে এখনো সময় আছে। যারা নতুন এসেছে তাদের কাছে আমি অনুরোধ করবো আর্কাইভকে তৈরি করার জন্য। বিগত দিনের লোকজন এখনো আছে। তাদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। তাদের কাছ থেকে নিয়ে হলেও আমাদের আর্কাইভ তৈরি করা উচিত।’
আরেক সাবেক ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘একটা আর্কাইভ একটা জাতির জন্য দলিল। যেমন স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের যে অর্জন এটা আর্কাইভে আছে। এটা বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শিত হয়। এই খেলাধুলার ক্ষেত্রে, অ্যাচিভমেন্টের ক্ষেত্রে এটা অবশ্যই থাকা উচিত ছিল। এটা দেখেই জাতি ও যুব সমাজ উদ্বুদ্ধ হতো। আমাদের আরো বেটার ফুটবল খেলতে হবে।’
বাফুফের নবনির্বাচিত কমিটি অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে পদক্ষেপ নেয়ার।
বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম বলেন, ব্যক্তিগতভাবে ইচ্ছা আছে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ফুটবলের একটা প্রোপার আর্কাইভিং করা। এর বাইরে আরো একটি বিষয় আছে, আমাদের যে ইভেন্টসগুলো হয়, যে লীগগুলো হয় প্রতিনিয়ত সেগুলোর সঠিক তথ্য আর্কাইভিং করা।’
ফুটবল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাফুফে নিজস্ব উদ্যোগে আর্কাইভ স্থাপন করলে ফুটবলের গৌরবময় ইতিহাস সহজেই জানবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, সঙ্গে ফুটবলারদের অর্জন নিয়েও হবে না কোনো বিতর্ক।