মেলবোর্নে শেষদিনে অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের দাপটে নাকানিচুবানি খাচ্ছিলেন ভারতীয় ব্যাটাররা। তবু মান বাঁচানোর স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছিলেন যশস্বী জয়স্বাল। ধীরে ধীরে এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির পথেও। কিন্তু তার ৮৪ রানের ইনিংসটা থামে বিতর্কিত এক আউটে।
প্যাট কামিন্সের ছোঁড়া বলটা পুল করতে চেয়েছিলেন জয়স্বাল। কিন্তু ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটাতে পারেননি তিনি। বল চলে যায় কিপারের গ্লাভসে। অজি অধিনায়ক জোর দাবি তোলেন কট বিহাইন্ডের। মাঠের আম্পায়ার তাতে সাড়া না দেয়ায় সাহায্য চান থার্ড আম্পায়ারের।
টিভি আম্পায়ারের ভূমিকায় থাকা শরফুদ্দৌলা সৈকত যাচাই-বাছাই করতে বসেন। স্নিকোমিটারে অবশ্য বলের সঙ্গে ব্যাট-কিংবা গ্লাভসের সংযোগের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবু বলের গতিপথ পরিবর্তন দেখে আউটের সিদ্ধান্ত জানান সৈকত।
এরপরই মাঠে ফুঁসে ওঠেন জয়স্বাল। ম্যাচ শেষে ভারতীয়রাও সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। কমেন্ট্রি বক্সে থাকা দেশটির কিংবদন্তি ব্যাটার সুনীল গাভাস্কার বলেন, অনেক সময় লেইট সুইংয়ের কারণেও এমনটি হতে পারে। যখন আপনার হাতে প্রযুক্তি থাকে তখন খোলা চোখে সিদ্ধান্ত না জানানোই ভালো। এটা কোনোভাবেই আউট হয় না।
ভারতের সদ্যসাবেক অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন এমন আউটকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন। এনডিটিভি সহ ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে চলছে তুলকালাম কান্ড। তারা এরই মধ্যে খুঁজতে বসে গেছে শরফুদ্দৌলা সৈকতের পরিচয়ও। রংচং মাখানো শুরু করেছে তার ক্যারিয়ারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও চলছে বিষেদাগার। ম্যাচ হেরে যেন দিশেহারা হয়ে গেছেন ভারতীয় সমর্থকরা।
তবে বিশ্বক্রিকেট প্রশংসায় ভাসাচ্ছে বাংলাদেশের আম্পায়ার সৈকতকে। অজি কিংবদন্তি রিকি পন্টিং যেমন আউটের সিদ্ধান্তে কোন ভুল দেখেন না। তিনি বলেন, পরিষ্কারভাবেই এটা গ্লোভসে স্পর্শ করেছে, জয়স্বালও সেসময় হাঁটা ধরেছে। স্নিকো সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত দেবে তার নিশ্চয়তা কী? আমি যতটুকু বুঝি তাতে এটি পরিষ্কার আউট।
বিখ্যাত আম্পায়ার সাইমন টোফেলও সৈকতের সাহসী সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তার মতে, থার্ড আম্পায়ার শেষপর্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছেন। যখন খালি চোখে ডিফ্লেকশন ধরা পড়ে তখন আর প্রযুক্তির সহায়তা নেয়ার দরকার পড়ে না।
ম্যাচ শেষে জয়স্বালের আউট নিয়ে মুখ খুলেছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। স্বীকার করেছেন তার কাছেও এটি আউটই মনে হয়েছে। তবে এ ধরনের বিতর্কিত আউটগুলো সবসময় তাদের বিপক্ষে যায় বলে আক্ষেপ করেছেন তিনি।
রোহিত শর্মার এমন আক্ষেপ শুনে অবশ্য মুখ টিপে হাসতে পারে বিশ্বক্রিকেট। আইসিসি থেকে শুরু করে ক্রিকেট দুনিয়ার সর্বত্র তারা যেভাবে ছড়ি ঘোরায়, তাতে রোহিতের এমন মন্তব্যকে ভুতের মুখে রাম নাম বলেও অভিহিত করতে পারেন অনেকে।