জাতীয় দলের সঙ্গে তামিম ইকবালের সম্পর্ক যেন রবি ঠাকুরের ছোটগল্পের সংজ্ঞাটার মত 'শেষ হইয়াও হইলো না শেষ।' অবসর, আবার সেখান থেকে ফিরে আসা সবই হয়েছে। কিন্তু তামিম আর জাতীয় দলে থিতু হতে পারেননি। বিশ্বকাপ কিংবা কোন সিরিজ এলেই আলোচনায় চলে আসেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার।
২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ফেসবুক বার্তায় স্কোয়াড থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তামিম। পরের বছর আবারও এই সংস্করণের বিশ্ব আসরের আগে নিয়ে নেন অবসর। গেল বছর অবসরকান্ডের পর ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলের যাত্রা মুহূর্তে আবারও বিতর্কিত মন্তব্য করেন তামিম ইকবাল। এরপর আর তামিমের জাতীয় দলের হয়ে খেলা হয়নি।
দল যখন আরও একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন এই ফরম্যাট থেকে অবসর নেয়া তামিম আবারও আলোচনায়। জাতীয় দলে কবে ফিরবেন তিনি বা আদৌ ফিরবেন কিনা, এ নিয়ে এখনো চলছে আলোচনা।
যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ‘আমি যেটা শুনেছি, তামিম আগামী বছর থেকে খেলবে।’
জাতীয় দলে তামিম ইকবালের আলোচনা মূলত তার ফিটনেস নিয়ে। সেই তামিম ২০২৫ সাল পর্যন্ত কতটুকু ফিট থাকবেন? আদৌ তার সেরা ছন্দে ফিরতে পারবেন তো? শোনা যায়, দলের ক্রিকেটারদের মধ্যেও তার চাহিদা কমেছে। তার মানে, তামিম ফিরলে ড্রেসিংরুমে অস্বস্তিও তৈরি হতে পারে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, জাতীয় দলে তামিম ইকবালের আর প্রয়োজনীয়তাই বা কতটুকু? দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের ক্যারিয়ারে ব্যাট হাতে দেশের ক্রিকেটে দারুণভাবে অবদান রাখলেও, এবার কী নতুনদের জায়গা ছেড়ে দেয়ার সময় হয়েছে? বিশ্লেষকরা মনে করেন, এখনই সময় তামিমের ভবিষ্যত নিয়ে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত নেয়ার।
ক্রিকেট বিশ্লেষক নাজমুল আবেদিন ফাহিম বলেন, ‘তামিমের বেশি সময় নেই। দুই-চার বছর হয়তো সময় আছে। এখন খেললো না, নতুন একজন সুযোগ পেলো। আবার তামিম চলে আসলো, এমন তো না। আর যদি শেষ সময় হয়ে থাকে, তাহলে তামিমের দ্রুত ক্রিকেটে ফেরা উচিত।’
নাজমুল আবেদিন ফাহিম আরও বলেন, ‘তামিম যদি মনে করে ফিট আছে, তাহলে এখনই খেলা উচিত। এরপরে আবার কখন সুযোগ হবে সেটা তো বলা যাবে না। কেননা দিন দিন তামিমের সুযোগ কমতে থাকবে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটীয় সংস্কৃতির দীনতার অন্যতম, মাঠ থেকে অবসর নিতে না পারা। তামিম ইকবালও কী তেমনই পরিণতির দিকে হাঁটছেন, তা সময়ই বলে দেবে।