রাতভর অবস্থান কর্মসূচি শেষে দ্বিতীয়দিন তিস্তার পাড়ের মানুষের ঘুম ভাঙ্গে ভোরের ট্রেনের হুইসেলে। সকাল ৮টা থেকে জড়ো হয় তিস্তার চরে।
‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচায়’ স্লোগানে তখন মুখরিত তিস্তা রেলসেতু ও সড়কসেতুর মাঝখানের চর।
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় তিস্তা সড়ক সেতুর লালমনিরহাট প্রান্ত থেকে পদযাত্রা দিয়ে শুরু হয় তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ২য় দিন। প্ল্যাকার্ড, পতাকা হাতে যাত্রা করে লালমনিরহাট ও রংপুরসহ ৫ জেলার হাজার হাজার মানুষ। তাদের কণ্ঠে তিস্তার পানির সুষম বণ্টনের দাবি।
আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, ‘তিস্তা পারের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে আমরা এখন রাজপথে নেমেছি।’
আরেকজন বলেন, ‘যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে এর মাধ্যমে আমরা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি আদায় করবো।’
আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও তিস্তার পানি ইচ্ছেমতো আটকে রাখার অভিযোগ ভারতের বিরুদ্ধে। উত্তরে নারি, পুরুষ সকল শ্রেণীর মানুষের কণ্ঠে বৈষম্য দূর করার প্রত্যয়।
আরেকজন বলেন, ‘অধিকার ফিরে না পাওয়ায় আমরা এই গণ আন্দোলনে নেমেছি। সফল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’
এই আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধাপে ধাপে আন্দোলন চলবে।
তিনি বলেন, ‘বার বার আমাদের পক্ষ থেকে ভারতের সাথে অসম চুক্তি করা হয়েছে। এইটার মূল কারণ ছিল পতিত শেখ হাসিনা সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি।’
এদিন দুপুর থেকে প্ল্যাকার্ড হাতে মাঝ নদীতে নেমে প্রতিবাদ জানায় উত্তর জনপদের আগ্রাসন বিরোধী সাধারণ মানুষ। উত্তরের জনপদের একান্ত নিজের তিস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন তারা। নদীতে ডুব দিয়ে জানান দেন এই স্রোতধারার মালিকানা তাদের।
বিকেল ৫টায় তিস্তা পাড়ের জনতার সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, তিস্তা ইস্যুতে প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করছে না ভারত। এসময়, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ভারতের সাথে বাংলাদেশের যে ৫৪ টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা কারো করুণার বিষয় না। যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাপ্য।’
নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কথার গড়মিলের জন্য স্বৈরাচারের পথ সুগম করে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।