আজ (সোমবার, ২৭ জানুয়ারি) এভিয়েশন ও পর্যটন খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (এটিজেএফবি) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট হিসেবে যখন টুরিস্ট পুলিশ যাত্রা করে তখন এর জনবল ছিল মাত্র ৬০০ জন। বর্তমানে এ সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন।’
অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাইনুল হাসান বলেন, ‘সরকারি হিসেবে বর্তমানে দেশে টুরিস্ট স্পটের সংখ্যা ১ হাজার ৬০০ এর মতো। তবে টুরিস্ট পুলিশ ৩২টি জেলার মোট ১৩০টি স্পটে নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি কোনো বিদেশি পর্যটক বা পর্যটকদের গ্রুপ যদি বাংলাদেশে ঘুরাঘুরির জন্য এসে নিরাপত্তা চায় সেক্ষেত্রে তাদেরকেও সাপোর্ট দেওয়া হয়। আমরা চাই টুরিস্ট পুলিশের মাধ্যমে দেশের পর্যটন ব্যবস্থাপনা আরো নিরাপদ হোক।’
টুরিস্ট পুলিশের কাজ করার চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় টুরিস্ট স্পট কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। অথচ এই সমুদ্রের পাশে পর্যাপ্ত টয়লেট নেই, গোসলের পর জামাকাপড় পরিবর্তনের জায়গা নেই, মোবাইল বা ব্যাগ রাখার নিরাপদ কোনো জায়গা নেই। তারপরও বিপুল সংখ্যক পর্যটক নিয়মিতই কক্সবাজার যাচ্ছে। তবে এসব বিষয়ে প্রায়ই পর্যটকরা টুরিস্ট পুলিশের কাছে নিজেদের হতাশার কথা ব্যক্ত করেন।’
এসময় টুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) নাদিয়া ফারজানা।
তিনি জানান, নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি টুরিস্ট পুলিশ পর্যটক অধ্যুষিত এলাকায় পেট্রোলিং, মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহযোগিতা, হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট মালিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণ প্রদান, গুরুত্বপূর্ণ টুরিস্ট স্পটে হাই-রেজল্যুশনের ক্যামেরা স্থাপন করে রিয়েল টাইম মনিটরিং করে। পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও নির্বিঘ্ন করতে পাহাড়ি রাস্তায় চলাচলের উপযোগী গাড়ি ও সারভেইলেন্স বা রেসকিউ ড্রোন কেনা প্রয়োজন।’
তিনি আরও জানান, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে টুরিস্ট পুলিশের একটি বুথ করা হবে। সেই বুথ থেকে দেশে নেমেই বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র সম্পর্কে ধারণা পাবে। পাশাপাশি দেশে ঘুরাঘুরির সময় তাদের পুলিশি নিরাপত্তার প্রয়োজন হতে পারে। সেসব বিষয়েও পর্যটককে এই বুথ থেকে সহযোগিতা করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘টুরিস্ট পুলিশকে নির্বিঘ্নভাবে কাজ করতে দিতে হলে কিছু আইনগত প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা দূর করতে হবে, জনবল বৃদ্ধি করতে হবে। ইউনিটটি বর্তমানে তোপখানা রোডের একটি ভবনে তিনটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে সদরদপ্তর পরিচালনা করছে। এখনই ইউনিটটির জন্য ভূমি ও অবকাঠামো নির্মাণ দরকার।’
এছাড়াও তারা টুরিস্ট পুলিশের জন্য বিদেশে বিশেষায়িত আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা জানান।
এসময় এটিজেএফবির পক্ষ থেকে সংগঠনের সভাপতি তানজিম আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব, যুগ্ম মো. শফিউল্লাহ সুমন, সাংগঠনিক সম্পাদক জুলহাস কবীর ও আদনান রহমান, কার্যনির্বাহী সদস্য মাসুদ রুমি, খালিদ আহসান, গোলাম মর্তুজা অন্তু এবং সাধারণ সদস্য সরোয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।
তানজিম আনোয়ার বলেন, সারাদেশের পর্যটন স্পটগুলোতে টুরিস্ট পুলিশের ভূমিকা প্রশংসা পাচ্ছে। তাদের কারণে মধ্যরাতেও পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতে সময় কাটাতে পারছেন।
এসময় তিনি টুরিস্ট পুলিশের বিস্তারিত কার্যক্রম নিয়ে এটিজেএফবির সঙ্গে সেমিনার ও ওয়ার্কশপ আয়োজনের কথা বলেন।