দেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে পর্যটনের জন্য আকর্ষণীয় সেন্টমার্টিনের অবস্থান। এটি দশর্নার্থীদের কাছে নারকেল জিঞ্জিরা বা দারুচিনির দ্বীপ নামেও পরিচিত। সমুদ্র বেষ্টিত মাত্র ৮ বর্গকিলোমিটারের সৌন্দর্যমণ্ডিত দ্বীপটি ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটসহ অনেক কারনেই বেশ কয়েক বছর ধরে আলোচনায় থাকছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী সেন্ট মার্টিনকে ২০২২ সালে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে সরকার।
প্রায় ৬৬ প্রজাতির প্রবাল, ১৮৭ প্রজাতির শামুক-ঝিনুক, ১৫৩ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ১২০ প্রজাতির পাখির বিচরণ সমুদ্র ভূমি সেন্টমার্টিন দেশের ভ্রমণপিপাসুদের মানুষের কাছে খুবই পছন্দের ও আকর্ষণীয়।
অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৮ অক্টোবর সেন্টমার্টিনে অবাধ যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। শর্তসাপেক্ষে রাত্রিযাপন না করা, বারবিকিউ পার্টি না করা ও ২ হাজারের বেশি পর্যটক একদিনে যেতে পারবে না বলে জানানো হয়।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তে অনেকেই আপত্তি জানায়। বিপাকে পড়ে সেখানকার বাসিন্দারাও৷ এমন পরিস্থিতিতে দেশের পর্যটকদের স্বার্থে কক্সবাজার নাগরিক ফোরাম হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে।
আজ (রোববার, ১৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াতের নিষেধাজ্ঞা বাতিল চেয়ে শুনানি করা হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞা কেনো বাতিল করা হবে না মর্মে রুল জারি করেন। সরকারকে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটকারির আইনজীবী ব্যারিস্টার উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর যে স্মারক ইস্যু করা হয়েছে এবং সেখানে দর্শনার্থীদের সেন্টমার্টিনে যাওয়া ও থাকার বিষয়ে যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে— তা কেন অবৈধ না ঘোষণা করা হবে না এটা ওপর চার সপ্তাহের রুল জারি করা হয়েছে।’
সেন্টমার্টিনকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থেই ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানান কক্সবাজার নাগরিক কমিটির সভাপতি।
কক্সবাজার নাগরিক কমিটির সভাপতি আ ন ম হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পর্যটন নির্ভর সেন্টমার্টিনের ব্যবসায়ীরা, সেন্টমার্টিন পর্যটক ও দর্শনার্থীরা না গেলে না খেয়ে মারা যাবে। এছাড়া সেখানকার জীববৈচিত্র্যের ওপর এর একটা প্রভাব পড়বে। এজন্যই পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যে স্মারক ইস্যু করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আমরা আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’
পহেলা ডিসেম্বর থেকে সীমিত আকারে পর্যটকদের নিয়ে সেন্টমার্টিনে জাহাজ ছেড়ে যাচ্ছে।