দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যগত পদ্ধতি থেকে বের হয়ে কৃষিখাতে বাড়ছে যন্ত্র নির্ভরতা। এতে কমেছে কৃষকের কায়িক শ্রম, সাশ্রয় হচ্ছে খরচ ও সময়ের। প্রতিনিয়ত কৃষিখাতে যন্ত্রের নির্ভরতা বাড়ায় এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক উদ্যোক্তা।
তবে আমদানি নির্ভর এই খাতে নানা চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতায় সুবিধা করতে পারছেন না স্থানীয় উদ্যোক্তারা। ফলে বিনিয়োগ করেও লোকসান মাথায় নিয়ে বন্ধ হচ্ছে একের পর এক কারখানা।
গেল এক দশকে হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছিল বেশ কয়েকটি কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনের ছোট ও মাঝারি কারখানা। যেখানে হ্যান্ড টিলার, পাম্প, মাড়াই ও ঝাড়াই মেশিন, সিড প্লান্টার, মিনি হারভেস্টারসহ ছোট ছোট কৃষি যন্ত্রাংশ তৈরি করা হতো। তবে লোকসানের কারণে এখন অধিকাংশ কারখানাই বন্ধ হয়ে গেছে।
বিসিক শিল্পনগরীতে তিনটি কারখানার মধ্যে বর্তমানে একটি কারখানা চালু আছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, দক্ষ কারিগর, উন্নত প্রযুক্তির ও পুঁজির অভাবে আলোর মুখ দেখছে না শিল্পটি।
উদ্যোক্তাদের একজন বলেন, ‘কারখানা দিয়েছিলাম প্রথমে তেমন একটা মুনাফা হয়নি।’
আরেকজন বলেন, ‘সরকারি সহযোগিতা না থাকায় অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’
বাংলাদেশের কৃষি যন্ত্রাংশের বাজার দখলে রেখেছে চীন, ভারত, জাপানসহ কয়েকটি দেশ। এসব দেশ থেকে প্রতি বছর অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তিগত মেধাসম্পন্ন ও প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি, কৃষিযন্ত্র তৈরিতে ভর্তুকি, সহজ নীতিমালা ও স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের ব্যবস্থা করলে আলোর মুখ দেখবে শিল্পটি।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আকতারুজ্জামান বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে যদি উৎপাদন হতো, এখানে যদি ওয়ার্কশপ তৈরি হতো তাহলে কৃষির জন্য ভালো হতো। স্থানীয়ভাবে যেসব কারখানা আছে সেগুলো সরকারের সাথে পরামর্শ করেই সমাধান করতে হবে।’
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রাংশ উৎপাদন করতে পারলে, একদিকে যেমন সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা, তেমনি বাজারে কমবে পণ্যের দাম।