জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে ৮ আগস্ট। এরপর কেটে গেছে ১০০ দিন। এর মাঝেই রাষ্ট্রের বিভিন্ন দিক সংস্কারে গঠন করা হয়েছে কয়েকটি কমিশন। যাদের কাজ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ব্যবস্থাপনাকে সংস্কার করা। সাথে তৈরি হচ্ছে সাধারণ জনগণ ও আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন আকাঙ্ক্ষা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে, আজ বিকেলে ‘কী চাই নতুন বাংলাদেশে’ শিরোনামে আলোচনার আয়োজন করে বেনার নিউজ। অংশ নেন রাষ্ট্রচিন্তক, রাজনীতিবিদ, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, শহীদ পরিবারের সদস্য ও বিএনপির প্রতিনিধিসহ অনেকেই। আলোচনায় উঠে আসে জুলাই আগস্ট বিপ্লবের ভয়াবহতার চিত্র।
নতুন বাংলাদেশকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আর এর জন্যে করণীয় কি কি- কতটুকু ভূমিকা রাখবে তরুণ সমাজ। তবে সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনা হয় কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লীগকে নিয়ে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো সমঝোতার রাজনীতি শুরু করে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে।’ বলেন একটি ভোটের জন্যে শুধু এই গণঅভ্যুত্থান হয় নাই, হয়েছে রাষ্ট্রীয় পরিবর্তন করার জন্যে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা আমরা সন্দেহের চোখে দেখছি। আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত যারা আলোচনা করছে আওয়ামী লীগকে নিয়ে তারা কখনো জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে হৃদয়ে ধারণ করতে পারেনি। এখন আলোচনার বিষয় আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করা। তাদের পুনর্বাসন বা নির্বাচনে আসা নিয়ে না। তাদের বিচার আগে নিশ্চিত করতে হবে।’
এদিকে আলোচনায় বিএনপি'র পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ড. মাহাদি আমিন। বলেন, ‘যদি বর্তমান সরকার প্রতিটি হত্যা ও গুমের বিচার করে তাহলে আওয়ামী লীগের কয়জন রাজনীতিতে থাকতে পারবে আর পারবে না সেটা তখনই দেখা যাবে।’
নতুন বাংলাদেশকে দাসত্ব ও প্রভুত্ব থেকে বের হওয়ার পরামর্শ দেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক সলিমুল্লাহ খান। বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘কোনো দেশের সার্বভৌমত্ব আছে কিনা সেটার মাপকাঠি হচ্ছে সেখানে ন্যায় বিচার আছে কিনা। আপনি যদি ন্যায় বিচার নিশ্চিত না করতে পারেন তাহলে আপনার ক্ষমতায় বসার অধিকার নেই আপনি বসতেও পারবেন না।’
ইন্টারপোলসহ ভারতের সাথে কথা বলে শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘দ্রুত বিচার সম্পন্নের পাশাপাশি সঠিক বিচার ব্যবস্থাও পরিচালনা করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এটা নিয়ে প্রশ্ন না করতে পারে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘আগে এসবের বিচার হবে। কোনো রকমের গাফিলতি হবে না। বিচার হবেই। যার হাতে রক্ত আছে তার সাথে কোনো দেনাপাওনা নেই।’
এছাড়াও নির্বাচন এবং সংস্কার একই সাথে চলবে আর নির্বাচিত সরকার যেই আসবে তারা যেন আর ফ্যাসিবাদী না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখার আহ্বান বক্তাদের।